সমকালীন প্রতিবেদন : দেবের খাদানে কোলিয়ারির রাইমা সুপারহিট! একটা সেলফি বদলে দিল জীবন! মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ জীবন গড়লো কোলিয়ারি কন্যার! কিন্তু কিভাবে দেবের সঙ্গে প্রথমবার পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পেলেন রাইমা? প্রথম শুটিং এর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? "খাদান" রিলিজের পর রাইমা'কে পায় কে?
রাইমা দেবের বড় ফ্যান। হঠাৎ করে নয়, সেই চার বছর বয়স থেকে দেবে মজে আসানসোলের বার্নপুরের পুরানহাটের বাসিন্দা রাইমা। এখন আসানসোল গার্লস্ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া তিনি। সেই স্বপ্নের নায়ক বাস্তবের মাটিতে? রাইমার কাছে ব্যাপারটা অনেকটা এরকমই ছিল। আসানসোলের কোলিয়ারিতে দেব পৌঁছেছেন, আর তিনি যাবেন না, এটা ভাবতেই পারেননি কলেজ পড়ুয়া।
তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই, দেবের আগামী ছবির শুটিং দেখতে বাকি অনেকের মতোই জামুড়িয়ায় হাজির হয়েছিলেন রাইমা। তখন কি আর ভেবেছিলেন যে, ওই সিনেমাতেই অভিনয়ের সুযোগ পাবেন রাইমা? তারপর সুযোগ পাওয়া, অভিনয় করা। এতকিছুর পর ‘খাদান’ মুক্তি। এখন তো পশ্চিম বর্ধমানের কোলিয়ারি এলাকায় হলে ‘বাড়ির মেয়ে’কে দেখার টানেও অনেকে টিকিট কাটছেন।
দেবের সঙ্গে তাঁর দৃশ্য পর্দায় ভাসলেই পড়ছে ‘সিটি’। এ কি স্বপ্ন? না। বাস্তব। যে বাস্তবটা আচমকাই স্বপ্নের মতো এসেছে রাইমার জীবনে। কে বলে মন থেকে কিছু চাইলে সেটা পাওয়া যায় না? ইচ্ছে থাকতে হয়। সেই ইচ্ছেই রাইমাকে টেনে নিয়ে গেছে দেবের কাছে। রাতারাতি রাইমা হয়ে উঠেছেন অভিনেত্রী। এ কথা নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেন না এখনো কলিয়ারির রাইমা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী রাইমা জানিয়েছেন, বছর খানেক আগে তিনি ‘খাদান’ ছবির শুটিং দেখতে গিয়েছিলেন জামুড়িয়ায়। দেবের সঙ্গে একটা ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সেলফি তুলতে গিয়েই সুযোগ পেয়ে যান অভিনয়ের। তার কথায়, ‘‘ছোট থেকে অনেকে ঠিক করে নেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবেন। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, কাছ থেকে দেবদাকে দেখব।’’ ব্যাস্। সেটাই তো সত্যি হয়ে গেল।
মার্চ মাসে শুটিং দেখতে গিয়েছিলেন। তার পর সেপ্টেম্বরে সুযোগ আসে। একজনের মাধ্যমে খবর এল, একটা রোল আছে। করব কি না। এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলেন রাইমা! খুব স্বাভাবিক নয় কি? সিনেমার সুযোগ! অভিনয়ের সুযোগ! তাও আবার স্বপ্নের নায়ক দেবের সাথে! ভাবা যায়? কথায় আছে, "ভগবান যব দেতা হে তো ছপ্পার ফার কে দেতা হ্যা"! সত্যি রাইমা খাদান এর জন্য আজ এতো মানুষের ভালবাসায় সিক্ত। দেবের সান্নিধ্য পেয়েছেন। পর্দাতে একসঙ্গে এক ফ্রেমে দুজনে। নেম, ফেম– সবটা পেলেন একসাথে। আপাতত রাইমা আনন্দে ভাসছেন।
তবে শুটিংয়ের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা বেশ চাপের ছিল। রাইমা জানিয়েছেন প্রথম ৪০টা ‘টেক’ এর পর প্রথম শট ‘ওকে’ হয়েছে। কিন্তু তাঁর স্বপ্নের নায়ক সাহস জুগিয়েছেন। রাইমার কথায়, ‘‘ভুল করছি। দেবদা অন্যদের বলছেন, ‘দাঁড়াও। ও পারবে।’ যত বার ক্যামেরা রোল হচ্ছে দেবদা অভিনয় বুঝিয়ে দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘বাবু, তোমার পার্ট এরকমভাবে হবে।’ শুটিং শেষ হওয়ার পর দেবদা ওঁর ক্যামেরাম্যানকে ডাকেন। তার পর আমায় ডেকে বলেন, ‘বাবু আয়, ছবি তুলব।’ এটাই দেব!
যে দেবের ‘ফ্যান’ রাইমা। ‘গুরু’র নতুন ছবি এলেই বন্ধুদের নিয়ে কাছের সিনেমা হলে যেতেন। দেব নায়িকার সঙ্গে নাচলে দর্শকের আসন ছেড়ে নেচে উঠতেন তিনি। গুন্ডাকে দেব শায়েস্তা করলে ‘সিটি’ দিতেন। আর আজ দেবের সঙ্গে ‘খাদান’-এ ‘স্ক্রিন’ শেয়ার করে রাইমা পাল বলছেন "এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না"! কোলিয়ারির মানুষ এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না। ২০ ডিসেম্বর ‘খাদান’ মুক্তির দিনেই ছবি দেখে ফেলেছেন রাইমা। এটাতো হতেই হত। দেবের সিনেমা, সঙ্গে নিজের অভিনয়। তবে শুধু রাইমা নন।
দেবের সঙ্গে রাইমাকে দেখতে আসানসোলের সিনেমা হলগুলোয় আলাদা করে ভিড় হচ্ছে। তাঁর জন্য এলাকার মানুষ হলে গিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সেই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে রাইমা কী বলেছেন জানেন? জানেন ভবিষ্যতে ঠিক কি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন রাইমা পাল? একজন সফল অভিনেত্রী। হ্যাঁ, এর পর অভিনয়ই করবেন। সঙ্গে রাইমা জুড়ে দিলেন, "আবার দেবের সঙ্গে কাজের সুযোগ এলে তো কথাই নেই।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন