Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪

গরুর গোবর দিয়ে রকেট চালানোর পথ বের করল জাপান

 

Rocket-with-dung

সমকালীন প্রতিবেদন : গোটা পৃথিবীকে চমকে দিয়ে একটি জাপানি মহাকাশ স্টার্টআপ কোম্পানি এমন রকেট তৈরি করেছে, যা কিনা গোবর থেকে প্রাপ্ত তরল মিথেন ব্যবহার করে মহাকাশে যেতে পারবে। এই প্রথমবারের মতো তরল বায়োমিথেন একটি রকেট জ্বালানী হিসাবে পরীক্ষা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে একটি বিকল্প পথ তৈরি করতে পারে।

জাপানি স্টার্টআপ কোম্পানি ইন্টারস্টেলার টেকনোলজিস, হোক্কাইডো স্পেসপোর্টে 'জিরো রকেট' এর জন্য তাদের কসমস ইঞ্জিনে ১০ সেকেন্ডের একটি "স্ট্যাটিক ফায়ার টেস্ট" পরিচালনা করেছে। এমনকি তারা এই পরীক্ষার একটি ভিডিওও প্রকাশ করেছে, যাতে এই বায়োমিথেন জ্বালানির কার্যকারিতা ও ক্ষমতা দেখা যাচ্ছে। 

লিকুইড বায়োমিথেনের সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি বর্তমানে রকেটে ব্যবহৃত জ্বালানির থেকে অনেক বেশি পরিষ্কার এবং প্রচুর পরিমাণে সস্তা ও সহজলভ্য। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে স্টার্টআপটি বলেছে যে, টোকিও ইউনিভার্সিটি এবং জাক্সা স্পেস ইনোভেশনের বৈজ্ঞানিকরা অক্লান্ত গবেষণা এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই রকেটটি তৈরি করেছেন। 

স্টার্টআপ কোম্পানি ইন্টারস্টেলার টেকনোলজিস এর মতে গরুর গোবর থেকে তৈরি বায়োমিথেন গ্যাস দ্বারা চালিত রকেটে কম্পোনেন্টের সংখ্যা প্রচলিত ইঞ্জিনগুলির থেকে এক-দশমাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে রকেট ইঞ্জিনের উৎপাদন খরচ কমিয়ে সামগ্রিক ব্যয়ের প্রায় অর্ধেক বাঁচানো সম্ভব হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

জাপানি এই স্টার্টআপের ভবিষ্যতের জন্য আরো উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের লক্ষ্য, এই উদ্ভাবনী রকেট ইঞ্জিন ব্যবহার করে অদূর ভবিষ্যতেই পৃথিবীর লোয়ার অরবিটে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে তা স্থাপন করা।

বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘকাল ধরেই রকেট উৎক্ষেপণের কারণে পরিবেশের ওপরে পড়া মারাত্মক প্রভাবের উপর আলোকপাত করছেন। বিশেষ করে কেরোসিন এবং অক্সিজেন জ্বালানী দ্বারা চালিত রকেট ইঞ্জিনগুলির ক্ষেত্রে। 

এই জ্বালানিগুলির মাধ্যমে লঞ্চ হওয়া রকেটগুলি উপরের বায়ুমণ্ডলে এক ধরনের কালো কালির মতো ধোঁয়া নির্গমন করে, যার কণাগুলি বছরের পর বছর ধরে থাকতে পারে। এর দীর্ঘ প্রভাব গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ে ব্যাপক অবদান রাখে। পাশাপাশি, ভঙ্গুর ওজোন স্তরের জন্যেও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

তবে গরুর গোবর দ্বারা সৃষ্ট এই বায়োমিথেন গ্যাস বর্তমান সময় ব্যবহৃত জ্বালানির মতো ক্ষতিকারক তো নয়ই, বরং বহুগুণে সাশ্রয়ী। এটা অবশ্যই উল্লেখ্য যে, গোবর থেকে প্রাপ্ত মিথেনকে জ্বালানীর উৎস হিসেবে ব্যবহার করার ধারণাটি নতুন নয়। 

এর আগে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির একটি গোবর-জ্বালানিযুক্ত রকেট ইঞ্জিনও সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয়েছিল। তবে ইন্টারস্টেলার টেকনোলজিস প্রথম বেসরকারি সংস্থা হিসেবে এই কাজ করে দেখিয়েছে। তবে যাই হোক না কেন, প্রথমবারের মতো একটি স্পেস রকেটকে শক্তি দেওয়ার জন্য জ্বালানী হিসেবে বিবেচনা করায় গোবরের বিভিন্ন বহুমুখীতা প্রদর্শিত হচ্ছে।

নতুন এই রকেট ইঞ্জিনের সফল পরীক্ষা প্রকৃতপক্ষেই মহাকাশ অনুসন্ধানে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে চলেছে। এই পরীক্ষাটি সফল হওয়ার পর ভারতীয় বহু মানুষও যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। এখন দেখার পালা, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোও এই টেকনোলজির উপর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে কিনা।






‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন