সমকালীন প্রতিবেদন : বিশ্বের অন্যতম সংক্রামক অসুখ হেপাটাইটিস। এর দুটি রূপ- হেপাটাইটিস বি এবং সি। এই দুই অসুখের বাহন সংক্রামিত রক্ত। অর্থাৎ এই রোগে আক্রান্ত কোনও রুগীর রক্ত যদি সুস্থ রুগীর রক্তের সংস্পর্শে আসে তাহলেই বিপদ। ভয়ঙ্কর বিপদ।
হেপাটাইটিস চিকিৎসকদের কাছে এটা একটা খুব বড়ো চ্যালেঞ্জ। কারণ, এই রোগের উপসর্গ প্রকাশ পায় অনেক পরে। আর যখন প্রকাশ পায়, তখন শরীরে জীবাণু ভালোভাবে বাসা বেঁধে ফেলে। প্রধানত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায় হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস৷ রক্ত সঞ্চালন এবং সিরিঞ্জে করে ড্রাগ নেওয়ার অভ্যাসই সংক্রমণের সবচেয়ে বড় মাধ্যম।
একাধিক হেপাটাইটিস আক্রান্ত রুগীর জীবন ইতিহাস নিয়ে জানা গেছে যে তাদের রক্ত সঞ্চালন হয় নি, তারা ড্র্যাগ নেয় না, এমন কি কোনো নেশাও নেই। তাহলে? এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে গবেষক, চিকিৎসকদের মাথায়। ওই ধরনের রুগীরা সংক্রামিত হলো কিভাবে?
প্রসঙ্গত গবেষণায় দেখা গেছে, এইচআইভি-র তুলনায় হেপাটাইটিস সি ১০ গুণ বেশি এবং হেপাটাইটিস বি ১০০ গুণ বেশি সংক্রামক। এছাড়াও জানা যায়, এইচআইভি ভাইরাস শরীরে বাইরে ৫/১০ মিনিটের বেশি বাঁচে না। কিন্তু হেপাটায়াটিসের ভাইরাস কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকে।
বহু রুগীর উপর গবেষণা করে গবেষক, চিকিৎসকদের দৃঢ় বিশ্বাস, সাধারণ মানের সেলুনগুলি হয়ে উঠছে হেপাটাইটিসের একটা হটস্পট। গবেষণায় জানা যাচ্ছে, এক ব্যক্তির হঠাৎ খাদ্যে অরুচি, ক্লান্তিভাবে, গাঁটে ব্যথা বেড়েই চলেছে।
পরে তিনি চিকিৎসকের কাছে গেলে স্বভাবিক কারণেই প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে কোনও সুফল না পাওয়ায় একাধিক রক্ত পরীক্ষার পরে যখন হেপাটাইটিস ধরা পড়লো, তখন রোগ অনেক গভীরে। একই ভাবে জনৈক রুগীর শিরোসিস অফ লিভার যখন ধরা পড়ে, তখন চিকিৎসক অসহায়।
কিন্তু কোথা থেকে তাদের শরীরে ঢুকছে ওই মারণ জীবাণু? একটা বিষয় প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই কমন, তা হল সেলুনে চুল এবং দাড়ি কাটা। কলকাতার আর এক বিশিষ্ট চিকিৎসক পরিসংখ্যান দিয়ে জানাচ্ছেন, 'দেশে মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ হেপাটাইটিস বি এবং ০.৮ শতাংশ হেপাটাইটিস সি এর শিকার।'
অনেকেই মনে করেন যে, এর কেন্দ্রে আছে সাধারণ সেলুন। এখন অনেক বড়ো সেলুন তাদের উপকরণ সবসময় ফুটন্ত জলে ডুবিয়ে রাখে। এ ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও রিস্ক কম। তাই চুল, দাঁড়ি কাটতে গিয়ে সাবধান। ব্লেড যাতে চেঞ্জ হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখুন। আর পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন সেলুনে যান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন