সমকালীন প্রতিবেদন : এপার বাংলার ইলিশ ব্যবসায়ীদের আবেদনে অবশেষে সাড়া দিল বাংলাদেশ সরকার। বুধবার বাংলাদেশের বানিজ্য মন্ত্রণালয় এব্যাপারে একটি লিখিত অনুমোদন দিয়েছে। ইতিমধ্যেই সেই অনুমোদনের কাগজপত্র বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানীকারীদের পাশাপাশি এদেশের ইলিশ আমদানিকারীদের কাছেও এসে পৌঁছেছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্বাভাবিকভাবে খুশি ইলিশ ব্যবসায়ীরা।
বাঙালীদের কাছে ইলিশ মানেই একটা জিভে জল আনা ব্যাপার। আর সেটা যদি হয় বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনার ইলিশ– তাহলে তো আর কথাই নেই। একসময় প্রতি বছর নিয়ম করে বাংলাদেশ থেকে টন টন ইলিশ এই বাংলায় আমদানি হতো।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বিশেষ পরিস্থিতির কারণে একসময় সেই মাছ রপ্তানীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আর তারপর থেকে বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি।
এদিকে, এপার বাংলার ইলিশপ্রিয় বাঙালিরা পদ্মার এই রুপোলী শস্য না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করতে থাকেন। তাঁদের হয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে দরবার করেন এই রাজ্যের ইলিশ ব্যবসায়ীরা। তারমধ্যে অন্যতম এই রাজ্যের ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের আবেদনে রাজ্য এবং রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার সাপেক্ষে আবার এই ইলিশ আমদানি শুরু হয়েছে।
সেই প্রেক্ষিতেই গতবছর ৪৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানীর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সরকার। সময় দেওয়া হয় মাত্র ১৫ দিন। কিন্তু সময়ের অভাবে শেষপর্যন্ত মাত্র ১৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করতে পারেন এদেশের ইলিশ ব্যবসায়ীরা। ফলে সেই মাছ সাধারণের নাগালের বাইরে ছিল।
চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবছরও আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ৭৯ টি রপ্তানীকারী সংস্থাকে ভারতে ৫০ মেট্রিক টন করে ইলিশ রপ্তানীর অনুমোদন দিয়েছে।
বুধবারই এই অনুমোদনপত্রে সাক্ষর করেন বাংলাদেশের বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন। আর এই অনুমোদন মেলার পরই মাছ ট্রাকবোঝাই করে পেট্রাপোল সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওনা করানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
এব্যাপারে এই রাজ্যের ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুলচন্দ্র দাস বলেন, 'আজ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ৩৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ ভারতে আমদানি করার অনুমোদন মিলেছে। তাই আজ রাত থেকেই মাছ ঢুকতে শুরু করবে। কিন্তু অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে ইলিশ মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। ফলে যে পরিমাণ মাছ বাংলাদেশ সরকার রপ্তানীর অনুমোদন দিয়েছে, সেই পরিমাণ মাছ বাস্তবে আমদানি করা সম্ভব হবে না।'
জানা গেছে, যে মাছ বাংলাদেশ থেকে আসছে, সেই মাছের ওজন ৭০০ গ্রাম থেকে দেড় কিলোগ্রামের মধ্যে হবে। পাইকারি বাজারে তার দাম থাকবে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। ফলে পুজোর মুখে বাংলার ইলিশ এই রাজ্যে আমদানি হলেও, দামের দিক থেকে বিচার করলে সেই মাছ আম বাঙালির পাতে কতটা পড়বে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন