সমকালীন প্রতিবেদন : আপাত দৃষ্টিতে আর পাঁচটি মাছের ট্রাকের সঙ্গে এই ট্রাকটিকেও আলাদা করা যাবে না। কিন্তু মাছ রপ্তানীর আড়ালে সেই ট্রাকে করেই যে বিপুল পরিমান সোনা পাচার করা হচ্ছিল, তা সাধারণভাবে ধারণা করা সম্ভব নয়।
কিন্তু সূত্রের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে সেই মাছের ট্রাকের ভেতর থেকেই উদ্ধার হল ৪০ টি সোনার বিস্কুট। অত্যন্ত গোপনে এবং যত্নে সেই বিস্কুটগুলি একটি পেটির ভেতরে সাজিয়ে রাখা ছিল। বিএসএফের তল্লাসী অভিযানে অবশেষে বেরিয়ে এলো সেই সোনার বিস্কুট।
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ ছাড়াও সারা বছর নানাধরনের মাছ ভারতে আমদানি হয়। সেভাবে শনিবার রাতেও বাংলাদেশের বেনাপোল হয়ে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি মাছের ট্রাক ঢুকেছিল। কিন্তু সেই ট্রাকগুলির একটিতে পাচার করা হচ্ছিল সোনার বিস্কুট।
সীমান্তে কর্তব্যরত বিএসএফের ১৪৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের কাছে খবর আসে যে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে মাছ রপ্তানী করতে যাওয়া একটি ট্রাকে করে প্রচুর পরিমানে সোনার বিস্কুট পাচারের চেষ্টা হচ্ছে। ট্রাকের নম্বরও জানতে পারে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ।
এরপর ওই নির্দিষ্ট ট্রাকটি পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছাতেই সেখানে হাজির হয়ে যান বিএসএফের একটি বিশেষ দল। এরপর ট্রাকের ভেতরে শুরু হয় তল্লাসী অভিযান। সেই অভিযানে বিএসএফ জওয়ানেরা মাছের পেটির ভেতর থেকে একটি বিশেষ পেটি খুঁজে পান।
থার্মোকলের চারকোনা সেই পেটিটি সুন্দরভাবে সেলোটেপ দিয়ে মোড়া ছিল। সেই পেটিটি আলাদা করে সেটিকে ধাপে ধাপে খুলতেই দেখা যায়, তার ভেতরে সুন্দরভাবে সাজানো রয়েছে মোট ৪০টি সোনার বিস্কুট।
উদ্ধার হওয়া সোনার বিস্কুটগুলির মোট ওজন ৪ কেজি ৬৬৭ গ্রাম। যার আর্ন্তজাতিক বাজারদর ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ৫৭ হাজার টাকা। এই চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত তাকার অভিযোগে বিএসএফ ওই ট্রাকের চালক সুশংকর দাসকে গ্রেপ্তার করে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত ওই ট্রাক চালকের বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা। সে গত ১৫ বছর ধরে ট্রাক চালনার কাজের সঙ্গে যুক্ত। আর সেই কাজের পাশাপাশি সে এভাবে আর্ন্তজাতিক সোনা পাচারের মতো অবৈধ কাজের সঙ্গেও যুক্ত।
বিএসএফের জেরায় সে জানায়, যে ট্রাকে করে এই সোনা পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল, সেই ট্রাকের মালিকের নাম সফিকুল ইসলাম। তার বাড়িও সাতক্ষীরায়। রয়েস ইন্টারন্যাশনাল নামে বাংলাদেশের একটি রপ্তানী সংস্থার মাধ্যমে সাতক্ষীরা থেকে এই মাছ বোঝাই করা হয়েছিল।
সেই মাছ ভারতে আনার পর কলকাতার বাবা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। সেই মাছ রপ্তানীর আড়ালেই এই সোনা পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল। আটক সোনা, ট্রাক সহ ধৃত ট্রাক চালককে পরে পেট্রাপোল শুল্ক দপ্তরের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ কর্তৃপক্ষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন