সমকালীন প্রতিবেদন : বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতগুলিতে যেভাবে একশ্রেণীর অসেচতন পর্যটক প্ল্যাস্টিক দ্রব্য ফেলছেন, তাতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্ল্যাস্টিক খেয়ে ফেলছে সামুদ্রিক প্রাণীরা। যার কারণে অদূর ভবিষ্যতে অনেক সামুদ্রিক প্রাণীরই বিলুপ্তি ঘটবে।
এমন আশঙ্কাপ্রকাশ করে মানুষকে সচেতন করতে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত পায়ে হেঁটে পাড়ি দিলেন এই রাজ্যের ৭ বাঙালী অভিযাত্রী। এই ৭ অভিযাত্রী হলেন– উজ্জ্বল দাস, দেবাশীষ চক্রবর্তী, তমোঘ্ন দাস, চয়ন দাস, শাশ্বত পাড়ুই, অংশুমান পাল এবং দেবাশীষ ভট্টাচার্য।
তাঁরা প্রত্যেকেই হাওড়া অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। তাঁদের এই অভিযানে সামিল হয়েছিলেন কাজল মজুমদার এবং সুজাউদ্দিন সোহান নামের বাংলাদেশের আরও ২ জন অভিযাত্রী।
এবারেই প্রথম নয়, নানারকম সচেতনতামূলক বার্তা নিয়ে মাঝেমধ্যেই সৈকত অভিযান করেন হাওড়া অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। এবারে সংস্থার ১০ বর্ষ পূর্তি। আর সেই উপলক্ষ্যে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ভারত–বাংলাদেশ মৈত্রীর বার্তাকে সামনে রেখে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত অভিযানে নামবেন।
সেই অনুযায়ী সংস্থার ৭ সদস্য গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের শাহপরী দ্বীপ থেকে যাত্রা শুরু করে ২০ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের নাজিরা টেক সমুদ্র সৈকতে এসে অভিযান শেষ করেন। ১১২ কিলোমিটারের এই যাত্রাপথে তাঁরা সমুদ্র সৈকতে পরে থাকা প্ল্যাস্টিক দ্রব্য পরিষ্কার করে পর্যটকদের সচেতন করেন।
শুধু সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখাই নয়, থ্যালাসেমিয়া এবং রক্তদান সম্পর্কে সচেতন করতে বাংলাদেশের দুটি স্কুলে প্রচার চালায় এই অভিযাত্রী দল। তাঁরা জানান, এই অভিযান প্রাথমিকভাবে সহজ ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযানের অনুমোদন দেওযা হচ্ছিল না।
পরবর্তী কক্সবাজারের জেলাশাসকের বিশেষ উদ্যোগে অনুমোদন মেলে। এমনই জানালেন এই অভিযাত্রী দলের প্রধান তথা হাওড়া অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উজ্জ্বল দাস।
বুধবার এই অভিযাত্রী দলের সদস্যরা পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় ভুখন্ডে প্রবেশ করার পর তাঁদেরকে ফুলের স্তবক এবং উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করেন ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ এবং তাঁর সতীর্থরা। প্রধান বলেন, 'এমন সচেতনতামূলক সৈকত অভিযানের জন্য বাঙালি হিসেবে আমরা গর্ববোধ করছি।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন