Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৩

সুগার লেভেল হঠাৎ বাড়লে কী করবেন ?

 

If-the-sugar-level-rises-suddenly

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে কম বয়স থেকে বেশি বয়স পর্যন্ত সকলের মধ্যে। গোটা পৃথিবী এই মুহূর্তে ডায়াবেটিস সমস্যায় ভুগছে। এই বিশ্ব ডায়াবেটিসের সমস্যায় মোটেও পিছিয়ে নেই ভারত। বরং ভারতকে বিশ্বের 'ডায়াবেটিস ক্যাপিটাল' বলা হয়ে থাকে। 

গোটা পৃথিবীর মোট ডায়াবেটিক পেশেন্টদের ১৭ শতাংশ আছেন কেবলমাত্র ভারতেই। দেশে এই মুহূর্তে প্রায় ৮ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসের দ্বারা আক্রান্ত। সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৪৫ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে প্রায় ১০ থেকে ১১ কোটি মানুষের সমান।

ডায়াবেটিস রোগীদের আসল সমস্যার কারণ, তাদের শরীরে থাকা অতিরিক্ত শর্করার পরিমাণ। সাধারণত প্রত্যেকের শরীরে থাকা 'ইনসুলিন' নামক এক হরমোন শরীরের শর্করাকে ভেঙে তা থেকে শরীরের জন্য শক্তি তৈরি করে। 

তবে ডায়াবেটিক পেশেন্টদের ক্ষেত্রে এই হরমোন কম নিঃসৃত হওয়ার কারণে শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় বেশি পরিমাণে। এর ফলস্বরূপ দেখা যায় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। যেমন, চোখে ছানি পড়া বা দৃষ্টি কমে যাওয়া, কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়া, ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি না শুকানো, ঘা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

তবে, ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে কেবল তাই নয়। এক ধরনের পেশেন্ট আছেন, যাদের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার পরে হঠাৎ করেই সুগারের লেভেল বেড়ে যায় অনেকটা। অনেক সময় এইরকম হুট করে বেড়ে যাওয়া হাই সুগারের কারণে ক্ষতি হতে পারে পেশেন্টের। 

তবে পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা এই সমস্যা থেকে বাঁচতেই কয়েকটা জিনিস রোজকার খাবারে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই খাবারগুলি সম্পর্কে, যেগুলি আপনাকে বাঁচাবে হাই সুগার লেভেলের কারণে তৈরি হওয়া বিপদ থেকে।

১| করলার জুস— কথায় আছে, 'যেই সবজি যত তেঁতো, তার উপকার পাওয়া যায় ততই মিষ্টি'। আর শরীরের এই অতিরিক্ত 'মিষ্টি' অর্থাৎ শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অন্যতম, সব থেকে উপকারী সবজি হল করলা। করলার মধ্যে আছে লাইকোপেনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কিনা রক্তে শর্করার মাত্রাকে চট করে বাড়তে দেয় না। ফলে নিয়ম করে সকালবেলায় এক গ্লাস করলার জুস যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে, তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে।

২| কাঁচা রসুন— সুগারের লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আরেকটি উপকারী সবজি হল রসুন। রসুনের মধ্যে থাকে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে সংক্রমনের বিপদকে কমায়। তাই সম্ভব হলে রোজ সকালবেলায় খালি পেটে এক কোয়া করে কাঁচা রসুন খেতে পারেন।

৩| চিয়া সিড— চাইলে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে এক গ্লাস করে চিয়া সিডের জল পান করা যেতে পারে। চিয়া সিডে থাকে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার এবং কম পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। রোজ এক গ্লাস করে চিয়া সিডের জল রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে কার্বোহাইড্রেট কম থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় হজম ক্ষমতারও বৃদ্ধি ঘটে।

৪| দানাশস্য— দানাশস্য দিয়ে তৈরি খাবার রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। দানাশস্যের তৈরি খাবারের মধ্যে পড়ে বার্লি, ওটস, কিনোয়া এবং আটা দিয়ে তৈরি খাবার। এই ধরনের খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। সেই সঙ্গে ভাতের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হবে অনেক। তবে অনেকের ধারণা, ভাত হয়তো সুগারের লেভেলকে বাড়িয়ে দেয়। সেই জন্য ডাক্তারেরা তা খেতে মানা করেন। আসলে এমন কিছু নয়। রক্তে সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভাত কোনও উপকারই করে না। সেই জন্য ডাক্তারেরা ডায়াবেটিক পেশেন্টদেরকে ভাত কম খেতে বলেন।

৫| ফল— বাজারে এমন বিভিন্ন ফল পাওয়া যায়, যা কিনা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আপেল, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরির মতো বেশ কিছু ফল রয়েছে, যা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই সমস্ত ফলগুলিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

ডায়াবেটিস রোগীদের উপকারের জন্য বলা এই পাঁচটি খাবার তাদেরকে সাহায্য করবে রক্তে সুগারের লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং একটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে। সেই সঙ্গে আমাদের সকলকেই সচেতন থাকতে হবে এবং অন্যদেরকেও সচেতন করতে হবে এই ক্রমবর্ধমান ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে। আমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই আগাম বিপদের সম্মুখীন না হতে হয়।




‌‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন