সমকালীন প্রতিবেদন : রাজ্যে নবম–দশম স্তরে শিক্ষক নিয়োগে ভুয়ো নিয়োগপত্র পাওয়া আরও বেশি শিক্ষকের খোঁজ পেল সিবিআই। বুধবার সিবিআই এর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টে একটি তালিকা জমা দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই সেই তালিকা দেখে স্তম্ভিত বিচারক। এব্যাপারে বৃহস্পতিবার নতুন করে কোনও নির্দেশিকা জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যান্য নিয়োগের মতো নবম–দশম স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও যে অনিয়ম হয়েছে, তা আগেই স্পষ্ট হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে এব্যাপারে তদন্তভার নেওয়ার পর সিবিআই এর পক্ষ থেকে প্রথমদিকে ১৮৩ জন ভুয়ো নিয়োগপত্র পাওয়া শিক্ষকের কথা জানায় সিবিআই।
সেই সময় বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, যারা অনিয়ম করে শিক্ষকতা করছেন, তারা যেন নিজেরাই চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে জানায়। না হলে তিনি এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করবেন। নভেম্বর মাসের একটি বিশেষ তারিখ পর্যন্ত এই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কিন্তু তারপরেও হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশই চাকরি থেকে ইস্তফা দেননি। এমনকি কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেতে এই শিক্ষকদের পক্ষে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। এই বিষয়টিতে বিস্ময়কর বলে অভিহিত করে এদিন এ ব্যাপারে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বিচারক।
এদিন এই মামলার শুনানির প্রথম ধাপে বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে ১৮৩ জন ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাদের নাম আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে সিবিআই এর পক্ষ থেকে আদালতে নতুন একটি তালিকা জমা দেওয়া হয়।
নতুন তালিকায় সিবিআই-এর পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নবম–দশম স্তরে ৯৫২ জনকে ভুয়ো সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক তদন্তের পর সিবিআই এই তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। এই ৯৫২ জনের মধ্যে প্রায় ৮০০ জনের কাছাকাছি চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছেন। বাকিরা ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন।
সিবিআই এর পক্ষ থেকে আদালতে নতুন এই তালিকা প্রকাশ করার পর বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিনের প্রথম ধাপে যে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন, সেটা বাতিল করে দেন। পরে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নতুন নির্দেশিকা জারি করা হবে।
আদালতের এদিনের পদক্ষেপে পরিষ্কার যে, ভুয়ো নিয়োগের ক্ষেত্রে বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগের মতই যথেষ্ট কড়া অবস্থানে রয়েছেন। তিনি কোনভাবেই অনিয়ম করে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের ব্যাপারে নমনীয় হবেন না। রাজ্য সরকার এই ভুয়ো নিয়োগপত্র পাওয়া শিক্ষকদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন