সমকালীন প্রতিবেদন : আবারও পুলিশের মানবিক মুখের পরিচয় পাওয়া গেল। পুলিশের উদ্যোগে হারানো প্রতিবন্ধী ছেলেকে ফিরে পেল এক পরিবার। বাঁকুড়া থেকে নিখোঁজ হওয়া অসুস্থ যুবক উদ্ধার হল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানা এলাকা থেকে। পুলিশের প্রচেষ্টায় হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে আপ্লুত পরিবার।
জানা গেছে, বাঁকুড়া জেলার খাতরা থানা এলাকার বাসিন্দা দীপক রায় রান্নার কাজ করেন। স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। ২৪ বছরের ছেলে অঙ্কিত রায় মানসিক প্রতিবন্ধী। আর সেই কারণে প্রায় সময়েই তাকে ঘরের ভেতরে নজরবন্দি করে রাখতে হয় পরিবারের সদস্যদের।
২৬ অক্টোবর শৌচাগারে যাবে বলে মাকে জানায় অঙ্কিত। আর তখন তাকে ঘরের দরজা খুলে দেন অঙ্কিতের মা। দরজা খুলে দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেন অঙ্কিতের মা। বেশ কিছুক্ষণ পর তাঁর খেয়াল হয় যে, অঙ্কিতের কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপর বাড়িতে এবং আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজির করেও অঙ্কিতের আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায় না। আত্মীয়দের বাড়িতেও খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না মেলায় অবশেষে পরিবারের পক্ষ থেকে বাঁকুড়া সদর থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়।
এভাবেই এক মাস কেটে যায়। পরিবারের লোকেরা একসময় ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দেন। তারই মধ্যে গতকাল খাতরা থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁদের বাড়িতে গিয়ে খবর দেন যে, তাঁদের নিখোঁজ ছেলেকে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানা এলাকায় পাওয়া গেছে।
ওই সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁদেরকে আরও জানান, তাঁদের ছেলে বর্তমানে হাড়োয়া থানায় রয়েছে। থানার এক অফিসারের মোবাইল নম্বর দিয়ে তাঁদেরকে যোগাযোগ করতে বলেন। এই খবর শুনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পরেন অঙ্কিতের পরিবারের সদস্যরা।
এরপর তাঁরা হাড়োয়া থানার ওই অফিসারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে আজ গাড়ি নিয়ে সোজা হাজির হন হাড়োয়া থানায়। থানায় হারানো ছেলেকে দেখে আনন্দে আপ্লুত হয়ে পরেন অঙ্কিতের বাবা দীপক রায়। পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা কেন তিনি।
এদিকে, গতকাল হাড়োয়া থানার পুলিশের একটি দল এক যুবককে এলাকায় উদভ্রান্তের মতো ঘুড়তে দেখে সন্দেহপ্রকাশ করেন। তাকে ডেকে তার সঙ্গে কথা বলতেই পুলিশকর্মীরা বুঝতে পারেন যে, ওই যুবক মানসিক প্রতিবন্ধী।
তার নাম, ঠিকানা জানতে চাওয়ায় সে তখন জানায় যে, তার নাম অঙ্কিত রায়। বাড়ি বাঁকুড়ার খাতরা এলাকায়। কিন্তু কিভাবে সে এতোদূরে চলে এলো, তা বলতে পারছে না সে। এরপর পুলিশকর্মীরা তাকে থানায় আশ্রয় দিয়ে খাতরা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এরপরই অঙ্কিতের পরিবারের পক্ষ থেকে হাড়োয়া থানায় যোগাযোগ করা হয়। এদিন উপযুক্ত প্রমান দেওয়ার পর অঙ্কিতকে তার বাবার হাতে তুলে দেয় হাড়োয়া থানা কর্তৃপক্ষ। এদিনই ছেলে অঙ্কিতকে নিয়ে বাঁকুড়ার খাতরার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন দীপকবাবু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন