সমকালীন প্রতিবেদন : টিভি দেখতে দেখতেই আচমকা গলায় কাগড় জড়িয়ে আত্মহত্যা করল চতুর্থ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্র। এক আত্মীয় তাকে ডাকতে এসে বিষয়টি লক্ষ্য করেন। যদিও ততক্ষণে সব শেষ। কী কারণে এমন ঘটনা, তা বুঝে উঠতে পারছেন না পরিবারের লোকেরা। বনগাঁ থানার ধর্মপুকুরিয়া এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজ সরকার নামে বছর ১০ বয়সের ওই ছাত্র বৃহস্পতিবারও স্কুলে গিয়েছিল। স্কুলে অন্যান্য দিনের মতোই ক্লাস করার পাশাপাশি স্কুলের গাছে জল দেয়। স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে যায়। ফলে তার আচরণের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখেন নি শিক্ষকেরা।
এদিন রাতে রাজের পিসির বাড়িতে জন্মদিনের একটি অনুষ্ঠান ছিল। এদিন বিকেলে সেখানে তার মা এবং বোন গেলেও রাজের দাদু অসুস্থ থাকায় রাজ অনুষ্ঠান বাড়িতে যেতে চায় নি। সে বাড়িতেই ছিল। সন্ধের পর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ায় রাজের মামাতো দাদা সুকান্ত রাজকে বাড়িতে নিতে আসে।
সুকান্ত ওই বাড়িতে এসে রাজের নাম ধরে অনেক ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পান নি। অথচ গোটা বাড়িতে আলো জ্বলছিল। এই অবস্থায় তিনি ঘরে ঢুকে দেখেন, বিছানার উপর চেয়ার রযেছে। আর ঘরের আড়ার সঙ্গে রাজের দেহ ঝুলছে। এই অবস্থায় রাজকে উদ্ধার করে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় ওই পরিবারে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজের মামাতো দাদা সুকান্ত জানান, রাজকে উদ্ধার করার সময় ঘরের টিভিতে একটি ক্রাইম সিরিয়াল চলছেল। মনে করা হচ্ছে, সেই সিরিয়াল দেখেই এমন কান্ড ঘটিয়েছে সে। তাছাড়া, বাড়িতে এমন কোনও ঘটনা ঘটে নি, যার ফলে সে এমন কান্ড ঘটাতে পারে।
একজন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রের এমন ঘটনা ঘটানোর বিষয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই ধরণের ঘটনাকে ডাক্তারি পরিভাষায় কপি ক্যাট সুইসাইড বলা হয়। এক্ষেত্রে, দৃশ্যমাধ্যম দায়ী। টিভি বা সিনেমা দেখে শিশুমনে এই ধরণের প্রবনতা তৈরি হয়। এই শিশুটির ক্ষেত্রে এমন ঘটনাই ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন