Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

সাপে কামড়ানো বৃদ্ধাকে ওঝার বাড়ি, পরিণতি মৃত্যু

Death-of-an-old-woman-bitten-by-a-snake

সমকালীন প্রতিবেদন : সাপে কামড়ানো বৃদ্ধাকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে নিয়ে যাওয়া হল ওঝার বাড়িতে। কিন্তু ওঝার বাড়ি ঘুরিয়ে ওই বৃদ্ধাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মারা গেলেন ওই বৃদ্ধা।

জানা গেছে, বনগাঁর কালুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা গ্রামের বাসিন্দা বছর ৬৯ বয়সের বৃদ্ধা সতীবালা বৈরাগী শনিবার সকালে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। এদিন সকাল ১০ টা নাগাদ নিজেদের বাড়ির উঠোনে থাকা খড়ের গাদা থেকে খড় বের করতে গেলে একটি সাপ তাঁকে কামড়ে দেয়।


ওই বৃদ্ধার হাতের একটি আঙুলে সাপে কামড়ালেও প্রথমদিকে বাড়ির লোকেরা বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন নি। পরে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার বদলে ওই বৃদ্ধাকে বাড়ির পাশে সুভাষ মন্ডল নামে এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ওঝা দাবি করে যে, ওই বৃদ্ধাকে কোনও বি‌ষধর সাপে কামড়ায় নি। ফলে ওঝা তাকে কোনও ওষুধ না দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে।


এরপর বৃদ্ধাকে বাড়ি ফিরিয়ে এনে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতালের বেডে তোলার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাপে কামড়ানোর পর বাড়ির লোকেরা ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালের বদলে ওঝার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সময় নষ্ট করেছেন। ফলে তাঁর চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায় নি বলে বৃদ্ধার ছেলে অনিমেষ বৈরাগী জানিয়েছেন। 


এদিকে, এদিন ওঝা সুভাষ মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। তার মা জানালেন, তার ছেলে দীর্ঘদিন কুকুর, বিড়াল, সাপে কামড়ানো রোগীদের গাছগাছালি দিয়ে নিজের তৈরি ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তোলে। বংশ পরম্পরায় তারা এই কাজ করে আসছে। এদিন ওই বৃদ্ধাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে, তার ছেলে দেখে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, এমনই দাবি ওঝার মায়ের।


ঘটনার খবর পেয়ে পরে বনদপ্তরের কর্মীরা মৃত বৃদ্ধার বাড়ির খড়ের গাদা থেকে একটি গোখরো সাপ উদ্ধার করেন। মনে করা হচ্ছে, এই বিষধর সাপের কামড়েই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। এদিনের ঘটনা‌র তীব্র প্রতিবাদ এবং মৃত বৃদ্ধার পরিবারের অসচেতনতার নিন্দা করেছে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি। 


সমিতির বক্তব্য, এখনও আমাদের সমাজের কিছু অংশের মানুষ সাপে কামড়ানো রোগীকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার বদলে ওঝার বাড়িতে নিয়ে যান। আর যার পরিণতি সতীবালা বৈরাগীর মতো মৃত্যুর ঘটনা। এব্যাপারে মানুষকে আরও সচেতন হবার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন