সমকালীন প্রতিবেদন : কলেজের নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করে আসছিলেন কলেজের হিসাবরক্ষক। আর তারই প্রেক্ষিতে হিসাবরক্ষককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার নহাটা যোগেন্দ্রনাথ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের হিসাবরক্ষক রণপতি রায়ের বিরুদ্ধে কলেজের আলমারিতে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি রাখার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই অভিযোগ তুললেন তার পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের অর্থের সঠিক হিসেব দিতে পারছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। মনে করা হচ্ছে, সেই অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে। কিভাবে ওই টাকা খরচ করা হয়েছে, তার হিসেব চেয়ে নহাটা কলেজকে চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কলেজের হিসাবরক্ষক রণপতি রায় রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের ডিপিআই, যুগ্ম সচিবকে চিঠি লিখে জানান যে, তাঁকে সব কমিটি থেকে বাদ দিয়ে, তাকে অন্ধকারে রেখে জোর করে তাকে দিয়ে চেকে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এব্যাপারে সেইসময় তিনি সন্দেহপ্রকাশ করে এই চিঠি লেখেন।
এমনকি কলেজের অধ্যক্ষকেও তিনি এব্যাপারে চিঠি লিখে তাকে কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করে টেন্ডার সহ নানা বিষয়ে কোন খাতে কত টাকা খরচ করা হচ্ছে, তা জানার সুযোগ করে দেওয়ার আবেদন জানান রণপতি রায়। কিন্তু তারপরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তার আবেদন মানে নি বলে অভিযোগ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে মনোমালিন্য তৈরি হয় হিসাবরক্ষক রণপতি রায়ের। আর তারই জেরে গত ১০ জানুয়ারী অধ্যক্ষের সঙ্গে তুমুল গোলমাল বাধে হিসাবরক্ষকের। এই ঘটনার জেরে ওইদিন গ্রেপ্তার হন হিসাবরক্ষক রণপতি। প্রায় ২২ দিন জেলে থাকার পর কোর্টের নির্দেশে জামিনে মুক্ত হন তিনি।
এরপর তিনি কলেজে কাজে যোগ দিতে গেলে তাকে যোগদান করতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। পুলিশকে জানালে পুলিশও এব্যাপারে কোনও সহযোগিতা করে নি বলে তার পরিবারের অভিযোগ। তারপর থেকে বাড়িতেই রয়েছেন তিনি। কোনও বেতনও পাচ্ছেন না।
এরইমধ্যে দিন দুয়েক আগে হঠাৎই কলেজের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, হিসাবরক্ষক রণপতি রায়ের হেফাজতে থাকা কলেজের আলমারি থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৪ রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে। এব্যাপারে তার বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
সংবাদমাধ্যমে এই খবর দেখে হতবাক্ তার পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের বক্তব্য, যে মানুষটি গত ৭ মাস ধরে কলেজে কাজে যোগদান করতে পারছেন না, বাড়িতে বসে রয়েছেন, তার পক্ষে কলেজে ঢুকে কিভাবে আলমারিতে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি রেখে আসা সম্ভব। রণপতি রায়ের স্ত্রী অসীমা রায়ের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন