Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২

বাংলার পুকুরে ইলিশ! খোঁজ দিচ্ছে থোড় বড়ি খাড়া

 ‌

Hilsa-in-the-pond-of-Bengal

সমকালীন প্রতিবেদন : পুকুরে ইলিশ! এ-ও কি সম্ভব! হ্যাঁ, সম্ভব। হাতেনাতে তা করে দেখিয়েছেন বাংলার বিজ্ঞানীরা। পুকুরে দিব্যি তরতরিয়ে বেড়ে উঠছে ইলিশ। অদূর ভবিষ্যতে রুই-কাতলার সঙ্গে একই পুকুরে রূপোলি শস্যও চাষ করা যাবে, এমনটাই আশা। দিনরাত এক করে চলছে গবেষণা। 

কোথায় চলছে সেই পরীক্ষানিরীক্ষা। কী বলছেন বিজ্ঞানীরা। পুকুরে চাষ করা ইলিশ কতটা বড় হচ্ছে। কী খাচ্ছে সেই ইলিশ। পুকুরের ইলিশের স্বাদ কেমন। কারা খেলেন সেই মাছ। এসবেরই সুলুক সন্ধান দিচ্ছে এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রকাশিত কৃষি সংক্রান্ত অন্য ধারার বই 'থোড় বড়ি খাড়া'। কৃষি সাংবাদিকতার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত বইটির লেখক ব্রতীন দাস।

'বাংলার মুখ' প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইয়ে 'ইলিশের ঘরকন্না' নিবন্ধটি থেকে জানা যাচ্ছে, সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকুয়াকালচারের রহড়া শাখায় বেশ কয়েক বছর ধরে পুকুরে ইলিশ চাষ নিয়ে গবেষণা চলছে। পাশাপাশি, সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ব্রাকিশ ওয়াটার অ্যাকুয়াকালচারের কাকদ্বীপ শাখাতেও চলছে ওই গবেষণা। 

সেখানকার বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁদের চাষ করা ইলিশ লোকজনকে খাইয়েছেন তাঁরা। কেউই স্বাদের পার্থক্য বুঝতে পারেননি। সিফা-র বিজ্ঞানীরা নদীয়ার কল্যাণী এবং উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া সেন্টারে পুরোপুরি মিষ্টি জলে ইলিশকে বড় করে তোলার চেষ্টা করছেন। 

আর সিফার বিজ্ঞানীদের কাজটা একটু অন্যরকম। তাঁরা প্রথমে কিছুদিন মিষ্টি জলে ইলিশকে বড় করে তারপর ছাড়ছেন হালকা নোনা জলে। ধীরে ধীরে বাড়ানো হচ্ছে নোনা জলের পরিমাণ। 

ইলিশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন পুরুলিয়ার সিধো কানহো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক অসীম নাথ। তাঁর কথায়, ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত অসুবিধা নেই। তার পর ইলিশের স্যালিনিটি শক প্রয়োজন। অর্থাৎ জলে একটা ধাক্কা দরকার। 

পুকুরে ইলিশ নিয়ে গবেষণা করা সিফা-র বিজ্ঞানীদের দাবি, ট্যাঙ্কে ইলিশের ডিমপোনার বাঁচার হার খুবই কম। সেকারণে তাঁরা হ্যাচিংয়ের পর নার্সারি পুকুরে ইলিশের ডিমপোনা ছাড়েন। ওই পুকুরে প্রথমে মিষ্টি জল থাকলেও প্রতিদিন একটু একটু করে ঢোকাতে থাকেন নোনা জল। 

ইলিশকে মিষ্টি এবং নোনা জলের মিশ্রণে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। মাস তিনেক পর যখন ইলিশের পোনাগুলি আঙুল সাইজের হয়ে যায়, তখন তাদের তুলে পুরোপুরি নোনা জলের পুকুরে ছাড়া হয়। এতে দেখা যাচ্ছে, বছরে ১২০-১৩০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হচ্ছে ইলিশের। শুধু ইলিশ নয়, 'থোড় বড়ি খাড়া' বইয়ে আরও একটি উল্লেখযোগ্য নিবন্ধ কালো চালের গুণাগুন। 

ব্ল্যাক রাইসের মধ্যে অ্যান্থোসায়ানিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, তা রুখে দিতে পারে ক্যানসার। এমনটাই বলছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। তাঁদের কথায়, কালো চাল আসলে সুপার ফুড। এই চালের ভাত সপ্তাহে তিনদিন খেলেই যথেষ্ট। 

শরীরে বাসা বাঁধতে পারবে না রোগব্যাধি। বাড়বে প্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীরকে সাহায্য করবে ডি টক্সিফিকেশনে। ভালো রাখবে হার্ট। বাড়াবে মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা। কমাবে খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা। সুস্থ রাখবে লিভার। 

বইটিতে রয়েছে স্ট্রবেরি কীভাবে স্ট্রোক রুখে দিতে পারে। নারকেল গাছ থেকে যে রস পাওয়া যায়, যার পোশাকি নাম নীরা, তা দিয়ে মিষ্টি বানালে সুগার রোগীও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। কাঁকড়ার কেরামতি থেকে উত্তরবঙ্গের তিস্তার বোরলি নিয়ে গল্প রয়েছে পাতায় পাতায়। জবাফুলের চা থেকে পাটপাতার চা কিংবা অপরাজিতা ফুলের চা, এসব চা কীভাবে আমাদের উপকার করে, জানা যাবে বইটি পড়লে।

বইটি বাংলার মুখ প্রকাশনীর ১৪৮ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও মিলছে ক্যালকাটা জার্নালিস্ট ক্লাবের ৩১০ নম্বর স্টল এবং কবিতা আশ্রম ৪৫৮ নম্বর স্টলে। বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেছিলেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। লেখকের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর– ৯৭৩৩৫৫২৪২৭। ই-মেল das.biltu11@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন