Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর, ২০২১

বনগাঁর দুর্গাপুজোর সেকাল–একাল - ১

 

Once-upon-a-time-in-Durga-Puja-of-Bangaon-1

বনগাঁর দুর্গাপুজোর সেকাল–একাল - ১

পীযূষ হালদার

বিশ শতকের চল্লিশের দশকে গড়ে ওঠে বনগাঁ টাউন ক্লাব, মতিগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব, বনগাঁ স্পোর্টিং ক্লাব। বনগাঁয় প্রথম বারোয়ারি দুর্গাপুজো শুরু করে বনগাঁ টাউন ক্লাব। যা বনগাঁ ঘোষ স্কুলে ঢোকার মুখে আটচালা একটা ঘরে হতো। এবারে সেই পুজো ৯৩ বছরে পরলো। একসময় এই পুজো টাউনহলে আয়োজন হতো। সেইসময় শহর কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন প্রফুল্ল ঘোষ। তাঁর উদ্যোগে টাউনহল থেকে এই পুজো ঘোষ স্কুলের কাছে চলে আসে। 


২০০০ সালের বন্যায় এই পুজো মন্ডপে জল উঠে সমস্যা তৈরি করে। সেই সময় বনগাঁ পুরসভার প্রধান ছিলেন তাপস মুখার্জী। তাঁর মা রমা মুখার্জীর আবদারে তাপস মুখার্জী ২০০২ সালে এই পুজোমন্ডপটি পাকা করার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে সেটি আরও বেশি সংস্কার করে সুন্দর মন্দিরের রূপ দেওয়া হয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় এই মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করেন তাপস মুখার্জী। 


২০১৫ সাল থেকে এই মন্দিরে অন্নভোগের মাধ্যমে নিত্য পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। তাপস মুখার্জী নিজে হাতে এই ভোগ রান্না করেন। টাউন দুর্গা মন্দিরের এই পুজোর অষ্টমীতে রেকর্ড পরিমান বাটা পরে। অঞ্জলী দেওয়ার জন্য প্রচুর ভিড় হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবছরও মন্দিরের বাইরে দূরত্ব বজায় রেখে নির্দিষ্ট গন্ডিতে দাঁড়িয়ে ফুল ছাড়া অষ্টমীর অঞ্জলী দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। 


এবছরও এই পুজো কমিটির পক্ষ থেকে অষ্টমীর দিন ১ কুইন্টাল ৪০ কেজি চালডালের খিঁচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে সাধারণের জন্য। এই পুজোর পাশাপাশি সেইসময় তার পরবর্তী বছর থেকে অন্যান্য ক্লাবগুলি দুর্গাপুজো শুরু করে। এর পরেই পাড়াগতভাবে এক একজন বিশিষ্ট মানুষের নেতৃত্বে এলাকায় এলাকায় দুর্গামন্ডপ গড়ে ওঠে এবং দুর্গাপুজো শুরু হয় ।


এ তো গেল কিছু আদি পুজোর কথা। এখনকার সময়ে প্রধান প্রধান পুজোগুলি সাধারণত ক্লাব সংগঠন বা পাড়াগতভাবে হয়। এসব পুজোর মন্ডপ, প্রতিমা নির্মাণ শৈলীতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। তাছাড়াও বিগত শতকের ষাটের দশক থেকে দুর্গাপুজোর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রথম প্রথম সাধারণ মণ্ডপে একচালার প্রতিমা পুজো হতো। 


১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে উজ্জ্বল সংঘ একচালা প্রতিমার বদলে শুরু করল আলাদা আলাদা কাঠামোয় প্রতিমার পুজো করা। তারপর থেকেই অন্যান্য ক্লাবগুলি প্রতিমার গঠনশৈলী পরিবর্তন করে। একমাত্র মতিগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব প্রতিমার গঠনের আদিরূপ বজায় রাখে। বনগাঁ টাউন দুর্গা বাড়ির পুজো পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এখনও। 


বর্তমান সময়ে পুজোর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, প্রতিটি ক্লাবের বা পাড়ার নাম দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যেও এখন বড় বড় পুজো শুরু হয়েছে। বনগাঁ শহরের কাছাকাছি গোপালনগর, গাঁড়াপোতা, হেলেঞ্চা, বাগদাতে বেশ কয়েকটা বড় দুর্গাপুজো হয়। তাই শুধু গুনে বলা যায় অন্তত কুড়ি-একুশটা দশ-বিশ লাখ টাকার বাজেটের পুজো হয় বনগাঁতে।‌






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন