সমকালীন প্রতিবেদন : দেওয়ালে আঁকা হিজিবিজি কতগুলি অক্ষর। আর তার সূত্র ধরেই চার বছর পর বনগাঁ থেকে উত্তরপ্রদেশের নিজের বাড়িতে ফিরলেন মনোজ সিং (৩৫)। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বনগাঁ মতিগঞ্জ এলাকায়। মতিগঞ্জ এর স্থানীয় শান্তি সংঘ ক্লাবের বিপরীত দিকে একটি নির্মীয়মাণ ভবনের সামনে দীর্ঘ প্রায় চার–পাঁচ মাস ঘোরাঘুরি করতেন এক যুবক। অবিন্যস্ত চুল, ধূসর মলিন পোষাক, কখনও কখনও এসে দাঁড়াতেন নির্মীয়মান ভবনের সামনে। ওই ভবনের নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার উৎপল মণ্ডল এবং স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা উদ্যোগ নিয়ে যুবকের চুল, দাড়ি কেটে তাঁকে নতুন পোশাক পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। তাঁর দুবেলা খাওয়া, থাকারও বন্দোবস্ত করা হয়।
এই বিষয়ে নির্মীয়মাণ ভবনের মালিক জিয়াউল হক বলেন, 'ছেলেটির মধ্যে অদ্ভুত একটি বিষয় ছিল। পরিশ্রম না করে খেতে চাইত না।' এভাবেই চলছিল। হঠাৎ একদিন ক্লাব সদস্য দেবব্রত দফাদার লক্ষ্য করেন, নির্মীয়মান ভবনের দেওয়ালে হিজিবিজি কিছু অক্ষর লিখেছেন মনোজ। কৌতূহলবশত সেই নম্বরগুলিকে এক করে দেখেন সেটি একটি ফোন নম্বর। আর সেই নম্বরে ফোন করতেই ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জানা যায় অদ্ভুত তথ্য। উত্তরপ্রদেশের বেওয়াড়িয়া জেলার গোরখপুর এলাকা থেকে চার বছর আগে নিখোঁজ হয়েছেন মনোজ সিং নামে এক যুবক।
সেই নিখোঁজ যুবকই এই মনোজ কি না, তা নিশ্চিত করতে এরপর মনোজের পরিবারের সদস্যরা ভিডিও কলে বনগাঁর এই যুবককে দেখতে চান। ভিডিও কলে মনোজকে দেখেই চিনতে পারেন তাঁর মা সহ পরিবারের অন্যরা। এরপর গোটা বিষয়টি এবং মনোজ এখন কোথায় আছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয় তাঁর পরিবারকে।
সোমবার সকালে মনোজকে নিতে বনগাঁতে এসে পৌঁছান তাঁর জামাইবাবু পাপ্পু সিং। মনোজকে নিয়ে এদিনই তিনি রওনা দেন উত্তরপ্রদেশের বাড়ির উদ্দেশ্যে। যাবার আগে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় ক্লাবের সদস্যদের। পাপ্পু সিং বলেন, 'সারা জীবন এই মানুষগুলির কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন