Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১

জন্মাষ্টমীতে কীভাবে পুজো করলে ইচ্ছেপূরণ হয়, জেনে নিন

 ‌

How-to-worship-on-Janmashtami-to-fulfill-the-wish

সমকালীন প্রতিবেদন : আজ জন্মাষ্টমী। গোকূলে দেবকীর অষ্টম গর্ভে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টম দিনে বা অষ্টম তিথিতে জন্ম নেন শ্রীকৃষ্ণ। এই তিথির আর এক নাম গোকূল অষ্টমী। এই দিনে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের ঘরে ঘরে চলছে গোপাল পুজোর আয়োজন। দুধ, ঘি, মধুতে স্নান সেরে নতুন জামা, গয়না পরে ফুল, চন্দন, আতরে আজ সেজে উঠবেন গোবর্ধনধারী। 

শাস্ত্র বলছে, দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করতে শুধু কৃষ্ণ নামই যথেষ্ট। আপনার বাড়িতে কৃষ্ণের মূর্তি বা চিত্রপট কিংবা গোপালের বিগ্রহ থাকলে, তাঁকে সাজিয়ে তুলুন নতুন করে। জন্মদিনের সাজে সজ্জিত করে ভোগ দিন মাখন, মিছরি। শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য দিনের মতো এদিনও দুপুরে গোপালকে সাধারণ ভোগ দিতে পারেন। সন্ধ্যা আরতির পর দিতে পারেন সন্দেশ ভোগ। এর পর কৃষ্ণকে শয়ন দিতে হবে। রাত বারোটার সময় তাঁকে আবার জাগাতে হবে। এর পর পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করাতে হবে। ফুল দিয়ে পুজো সেরে পাঞ্জরি দিয়ে ভোগ দিতে পারেন।

কী এই পাঞ্জরি? ধনিয়া চূর্ণ ঘিয়ে ভেজে তাতে ঘি মিশিয়ে যে বস্তু তৈরি হয় তাকে পাঞ্জরি বলে। অনেকে এতে বাদাম, নারকেল, কিসমিশ মিশিয়ে থাকেন। ভোগে যোগ করা যেতে পারে দই, মিষ্টি। এর পর কৃষ্ণের আরতি করে আবার শয়ন দিতে হবে। পর দিন দই, ক্ষীর, ননি দিয়ে পালন করতে হবে নন্দোৎসব। নারী–পুরুষ উভয়ই জন্মাষ্টমীর ব্রত পালন করতে পারেন। এদিন উপবাস করে রাতে পুজো দিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। পর দিন ব্রাহ্মণ ভোজন করানোর কথাও বলা হয়। এদিন হরিনাম জপ, কৃষ্ণলীলা শ্রবণ ও ভাগবত পাঠ করতে পারলে খুবই ভালো।

প্রচলিত বিশ্বাস, নিয়ম মেনে জন্মাষ্টমীর পুজো করলে সুফল পাওয়া যায়। মনের ইচ্ছেপূরণ হয়। দূর হয় দুঃখ দুর্দশা। ভক্তিভরে ব্রত পালন করে এই দিনে কোনও দম্পতি সন্তান চাইলে তাঁদের সেই স্বপ্নও পূরণ হয়। আজ, ৩০ আগস্ট রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট থেকে ১২ টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত পুজোর শুভক্ষণ। এদিন রাত ১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত রোহিনী নক্ষত্র থাকবে। আজ রাত ১১ টা ৪৭ মিনিট থেকে ১২ টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত নিশীথ পুজোর সময়। মোটামুটি ৪৫ মিনিট সময় থাকে পুজোর জন্য। এই সময়কালকেই শ্রীকৃষ্ণের ভূমিষ্ট হওয়ার সময় বলে ধরে নেওয়া হয়। 

মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৪৪ মিনিটের পর পারণ সারা যাবে। দিন গোপালকে কাঁচা দুধ দিয়ে স্নান করানোর নিয়ম। পরানো হয় নতুন জামা। ময়ূরের পালক দেওয়া মুকুট। রাখা হয় পাঞ্চজন্য শঙ্খ। বাঁশি, সুদর্শন চক্র, ফুলের মালা, হাতে বালা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় গোপালকে। জন্মাষ্টমীর তিথি শেষ হলে ফল খেয়ে উপবাস ভাঙতে হবে। পুজোর উপকরণে লাগবে ফুল, পঞ্চগব্য, পঞ্চগুড়ি, আতপ চাল, ফলের নৈবেদ্য, তুলসীপাতা, দুর্বা, ধূপ, প্রদীপ, পাট, বালি, পঞ্চবর্নের গুড়ো, মধু।

শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জন্মাষ্টমী হল অশুভকে বিনাশ করে শুভ শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার উৎসব। বিশ্বাস ও একতা ধরে রাখতে উৎসাহ দেয় এই ব্রত। জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে শশা নিবেদন করার প্রথা রয়েছে। বলা হয়, শশা পেলে অত্যন্ত খুশি হন নন্দলাল। যে ভক্ত তাঁকে এদিন শশা নিবেদন করেন, তাঁর যাবতীয় দুঃখ, কষ্ট তিনি মোচন করেন। এমনটাই প্রচলিত বিশ্বাস। জন্মাষ্টমীতে ঠিক রাত ১২ টায় শশা কাটতে হয়। এটি সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর মায়ের থেকে নাড়ি গ্রন্থি কাটার রূপক বলে মনে করা হয়।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন