সমকালীন প্রতিবেদন : যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশৃঙ্খলার ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতিতে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পাঠানো পদত্যাগপত্র মঙ্গলবার গ্রহণ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, নিরপেক্ষ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব অন্য কাউকে দেওয়া হবে না। আপাতত ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর নিজেই দেখভাল করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবভারতীকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতেই অরূপের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সোমবার জারি করা একটি লিখিত নোটে জানানো হয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনও রকম প্রভাব বা পক্ষপাতের অভিযোগ এড়াতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই থাকবে।
গত শনিবার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ফুটবল তারকা লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠানে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। দর্শকদের একাংশ অভিযোগ তোলে, মেসিকে ঠিক ভাবে দেখতে না পাওয়ায় ক্ষোভ থেকেই ভাঙচুর শুরু হয়। ঘটনার পর থেকেই প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মেসির সঙ্গে অরূপের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি, যা নিয়ে জনমনে এবং রাজনৈতিক মহলেও প্রশ্ন ওঠে।
এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করা হয়েছে। কমিটির উদ্দেশ্য যাতে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করতে পারে, সেই কারণ দেখিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন অরূপ। চিঠিতে তিনি বিশৃঙ্খলার দায় স্বীকার না করলেও তদন্তের স্বার্থে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রী সেই ইস্তফা গ্রহণ করে অরূপের ‘আবেগ ও উদ্দেশ্য’-এর প্রশংসা করেছেন।
অরূপ বিশ্বাস কেবল ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর থেকেই অব্যাহতি চেয়েছেন। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী হিসেবে তিনি মন্ত্রিসভায় থাকছেন। ইস্তফাপত্র গ্রহণের পর ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের নবান্নে তলব করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে সিদ্ধান্তের কপি পাঠানো হয়েছে।
ইতিমধ্যেই যুবভারতীকাণ্ডে একাধিক প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, বিধাননগর পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার এবং ক্রীড়া দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকে শোকজ করা হয়েছে। বিধাননগর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অনীশ সরকারকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সিইও দেবকুমার নন্দনকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। চার আইপিএস আধিকারিককে নিয়ে গঠিত সিট ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন