সমকালীন প্রতিবেদন : কলকাতাকেও হার মানায় কল্যাণী? দুর্গাপুজোয় কল্যাণীর আলাদাই রুপ। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের মানুষকেও টানছে। কেন? কোনো হোটেলে জায়গা নেই। আসলে কি হচ্ছে "কল্যাণী পুজো ট্যুরিজম" এ? মূলত আকর্ষণটা কিসের? গেস্ট হাউসগুলোতে এখনও জোরকদমে চলছে বুকিং। কেন? কি হচ্ছে কল্যাণীতে? কল্যাণীর ধাক্কায় পেছনে মহানগরীও?
চারদিনের পুজো অতীত। সাধারণ মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনায় বাড়তে বাড়তে এখন ছয়-সাত দিনের হয়ে গিয়েছে। তার জেরেই চাঙ্গা হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য। শুধু কলকাতা নয়, শহরের অদূরে সাজানো শহর কল্যাণীও এখন এর শরিক। দেখিয়ে দিচ্ছে, কলকাতার থেকে কোনো অংশে কম নয় কল্যাণী।
পরিস্থিতি এমন একটা জায়গায় পৌঁছে গেছে যে ভিন জেলা তো বটেই এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও কল্যাণীতে ঠাকুর দেখতে আসে মানুষ। ঠাকুর দেখার পর ফিরতে সমস্যা হলে, তাঁরা রাত কাটান এই শহরে। তাই কল্যাণী শহরের হোটেল কিংবা গেস্ট হাউজগুলোতে এখন ঘর বুক চলছে। কোনও কোনও হোটেল পুরোটাই বুকড হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার থেকেও লোক আসছে। এর আগেও এসেছেন। তবে এই বছর ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যাবসায়ীরা।
উল্লেখ্য, বারোয়ারি দুর্গাপুজোর আদিভূমি এবং একচ্ছত্র ‘অধিপতি’ কলকাতা শহরকে এর আগেও দেখিয়ে দিয়েছে কল্যাণী। গ্রাম, মফস্সলের জনস্রোত পুজোয় সর্বদাই কলকাতামুখী। কিন্তু সঙ্গে উলটপুরাণও যে ঘটে তা কল্যাণী দেখিয়েছে বারবার। শিয়ালদা থেকে কল্যাণীগামী ট্রেনে থিকথিকে ভিড়। গভীর রাতে বা ভোরবেলায় বাড়ি ফেরার ভিড় নয় বরং সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ওই ভিড় ঠাকুর দেখতে যাওয়ার। এই ছবি আগেও দেখা গেছে। তাহলে কি এবারেও সেই ছবির পুনরাবৃত্তি ঘটবে?
এমনিতেই মোটামুটি পঞ্চমী-ষষ্ঠী থেকে ভিন রাজ্যের লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। কলকাতা থেকে তো লোকজন আসেনই। পুজোর সময় ঝাড়খণ্ড, বিহার, বেনারস, দিল্লি থেকেও অনেক দর্শনার্থী আসছেন। এমনকি বাংলাদেশ আর ব্যাংকক থেকেও দর্শনার্থী এসেছেন কল্যাণীতে।
কল্যাণী আইটিআই মোড় থেকে সেন্ট্রাল পার্কের দিকে এগলে পরপর বেশ কয়েকটি হোটেল আর গেস্ট হাউজ রয়েছে। সেখানে এসি ঘর ১২০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে যায়। ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা যেমন ফোন করে আগেই বুক করে রাখছেন। আবার ভিন জেলার দর্শনার্থীরাও ঠাকুর দেখে রাতে যদি ফিরতে না পারেন, তবে ওদিন রাতেই ঢুঁ মারেন গেস্ট হাউজে। পুরোহিতরাও এসে সেখানে থাকেন।
সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষায় বাংলার মানুষ পরিযায়ী পরীক্ষার্থী দেখেছিল। পুজোয় কল্যাণীর দেখাতে চলেছে পরিযায়ী দর্শনার্থী। উৎসবের সীমানা নেই, তা বাঙালির শ্রেষ্ঠ দুর্গোৎসবের হাত ধরে আবারও প্রমাণ করতে চলেছে কল্যাণী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন