Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

সিঙাড়া-জিলিপি এখন সিগারেটের সারিতে! নয়া নির্দেশিকায় কড়া বার্তা কেন্দ্রের

 

Harmful-food

সমকালীন প্রতিবেদন : ধূমপানের পাশাপাশি এবার ‘জাঙ্ক ফুড’-এর বিরুদ্ধে সচেতনতা জোরদারে উদ্যোগী হল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় একেবারে সিঙ্গাড়া, জিলিপি, লাড্ডু, বড়া পাঁউরুটি—এই সমস্ত জনপ্রিয় খাবারকে ধরা হয়েছে স্বাস্থ্যহানিকর খাদ্য তালিকায়। ধূমপানের মতোই এগুলোও শরীরের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে বলে মত স্বাস্থ্য দফতরের। তাই এবার থেকে দেশের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির ক্যান্টিনে এ‌ই ধরনের খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত সতর্কবার্তা এবং সচেতনতামূলক পোস্টার টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এইমস নাগপুরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এই নির্দেশ বাস্তবায়নের কাজ। ক্যান্টিনের দেওয়ালে এখন জায়গা করে নিচ্ছে কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরি সংক্রান্ত সচেতনতামূলক বার্তা। শিঙাড়া কিংবা জিলিপির মতো ‘অতিপরিচিত’ খাবার খাওয়ার আগে যেন গ্রাহকরা তাদের স্বাস্থ্যগত দিকটি বুঝে সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে স্থূলতার সমস্যা ভয়াবহ হারে বাড়ছে। প্রতি পাঁচজন ভারতীয়র মধ্যে একজন ওবেসিটিতে ভুগছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৪৪.৯ কোটি ভারতীয় এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। এই প্রবণতা যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং কিডনির জটিলতা বাড়বে বহুগুণ। ফলে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকছে না বলে মনে করছে কেন্দ্র।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত চর্বি ও কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে দেহে মেদ জমে, যা ধীরে ধীরে স্থূলতার রূপ নেয়। আর এখান থেকেই জন্ম নেয় বহু জটিল অসুস্থতা। যেমন—টাইপ ২ ডায়াবেটিস, করোনারি হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক এমনকি ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়ে। ঠিক যেমন দীর্ঘদিন ধূমপানের অভ্যাস একাধিক মারাত্মক রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের ক্যান্টিনে এসব খাবার বিক্রি হলে তার পাশেই খাবারের উপাদান ও পুষ্টিগুণ সংক্রান্ত পোস্টার টাঙাতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষ জানেন, তাঁদের খাওয়া খাবারটিতে কতটা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি রয়েছে। এই ধরণের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে স্কুল, কলেজ এবং রাজ্য সরকারি অফিসেও ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত মন্ত্রকের তরফে।

এই উদ্যোগকে কেন্দ্রীয় সরকারের জনস্বাস্থ্য-নির্ভর কৌশলের অংশ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শুধু ধূমপান ও মদ্যপান নয়, দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস নিয়েও মানুষকে সচেতন না করলে আগামী দিনে স্বাস্থ্য খাতে বিপুল চাপ সৃষ্টি হবে, এমনটাই আশঙ্কা। সুতরাং, প্রিয় হলেও শরীরের শত্রু হয়ে উঠতে পারে সিঙাড়া-জিলিপির মতো ‘স্বাদযুক্ত’ খাবার। আর তাই এবার সেই বার্তাই ছড়াতে চাইছে কেন্দ্র। 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন