সমকালীন প্রতিবেদন : আইনজীবীর সেরেস্তা পরিণত হলো বিবাহ আসরে। আর সেখানে অভিযোগকারী যুবতীকে বিয়ে করল অভিযুক্ত যুবক। বৃহস্পতিবার অভিনব এই বিয়ের আসর বসেছিল বনগাঁ আদালত চত্বরে। রীতিমতো পুরোহিত ডেকে, বিয়ের মন্ত্র উচ্চারণ করে, মালা বদল, সিঁদুর দান, মিষ্টিমুখের মাধ্যমে সম্পন্ন হল এই বিয়ে।
ঘটনার সূত্রপাত একটি মামলাকে কেন্দ্র করে। বনগাঁ আদালতের আইনজীবী নিবেদিতা ঘোষ দেবনাথ জানান, বাগদা থানার হরিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা বিষ্ণু দাস এর সঙ্গে গত দু'বছর ধরে বনগাঁর শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী যুবতী সীমা দাসের ভালোবাসার সম্পর্ক চলছিল। সেই সুবাদে সীমা দাসের বাড়িতে যাতায়াত ছিল বিষ্ণু দাসের।
পেশায় শ্রমিক বিষ্ণু দাস ওই যুবতী এবং তার পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, আগামী দিনে সে সীমা দাস কে বিয়ে করবে। বিষ্ণু দাসের কথায় বিশ্বাস করে ওই যুবতীর পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই বিষ্ণু এবং সীমা দাস এর মধ্যে মেলামেশায় বাধা দেননি সীমার পরিবারের লোকেরা। আর এভাবেই এক সময় বিষ্ণু ও সীমা দাসের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়।
সীমা দাস এর অভিযোগ, কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই বিষ্ণু তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করে দেয়। ফোন করলে হয় ফোন কেটে দিত, না হলে ফোন ধরতো না। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে গত ৩০ মে বিষ্ণু দাসের বিরুদ্ধে বনগাঁ থানায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ দায়ের করেন সীমা দাস। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পরের দিন গ্রেপ্তার হয় বিষ্ণু দাস।
এরপর এক মাসেরও কিছু সময় কেটে যায়। গতকাল বনগাঁ এডিজে ১ আদালতের বিচারকের কাছে বিষ্ণু দাস আবেদন করে যে, সে সীমা দাসকে বিয়ে করতে চায়। আর এই বিয়ের শর্তেই বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন। আর সেই অনুযায়ী আজ, বৃহস্পতিবার বনগাঁ আদালতের আইনজীবী নিবেদিতা ঘোষ দেবনাথ এর সেরেস্তায় এই বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ব্যাপারে বিষ্ণু দাস জানায়, কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে সীমা দাসের সঙ্গে সে সম্পর্ক ছেদ করেছিল। নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাই এখন সে বিয়েতে রাজি হয়েছে। আগামী দিনে তারা দুজন স্বামী–স্ত্রী হিসেবে সুখে সংসার করতে চায়। এদিন ঘরোয়া এই বিয়ের আসরে বিষ্ণু এবং সীমা দাসের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন