সমকালীন প্রতিবেদন : বাংলার আকাশে বর্ষার ঘনঘটা শোনা গেলেও, দক্ষিণবঙ্গে এখনই নামছে না সেই কাঙ্ক্ষিত বর্ষা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর স্পষ্ট করে জানিয়েছে, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার অনুকূল পরিবেশ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই বর্ষা প্রবেশ করেছে এবং সেখানকার বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২ থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তে পারে আগামী তিন-চার দিনে। ফলে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি আরও তীব্র হবে। যদিও মাঝে মাঝে মেঘলা আকাশের দেখা মিলতে পারে এবং স্থানীয়ভাবে দু-এক পশলা হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তা তেমন স্বস্তি দেবে না।
সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর্দ্রতার পরিমাণ ৫৯ থেকে ৯১ শতাংশ। তাপমাত্রা অতিরিক্ত না হলেও আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বজায় থাকছে।
কেন বর্ষা আসতে বিলম্ব হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গে? আবহাওয়া দফতর এই প্রসঙ্গে জানাচ্ছে, বর্তমানে হরিয়ানা ও অসমের ওপর একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। এছাড়াও, পাকিস্তান সংলগ্ন অঞ্চলে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকেছে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চলে। এই অবস্থানগুলির প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢোকার পথে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
বর্ষা সাধারণত ১০ জুনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করে। তবে এবার কেরল এবং উত্তরবঙ্গে সময়ের আগেই বর্ষা এলেও দক্ষিণবঙ্গে এখনও অপেক্ষা চলছে। উত্তরবঙ্গে বর্ষার আগমন ঘটায় সেখানে স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টি নিয়ে সতর্কতা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই বর্ষা প্রবেশ করেছে। তার সঙ্গে শুরু হয়েছে বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। এছাড়াও দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টি হবে অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরাতে। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, কেরল, মাহে, উত্তরাখণ্ড। আগামীকাল, মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজধানী দিল্লি, চণ্ডীগড় ও হরিয়ানাতে।
একদিকে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে প্রবল বৃষ্টি আর অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের আকাশে অনিশ্চয়তা। এই অবস্থায় রাজ্যের মানুষ বর্ষার স্বস্তির জন্য তাকিয়ে আছেন আলিপুরের পরবর্তী পূর্বাভাসের দিকে। বর্ষার ঢোকার তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে, গরমের অস্বস্তিও ততই বাড়ছে। তাই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির অপেক্ষা আরও কিছুদিনের জন্য বাড়তে চলেছে বলেই মনে করছে আবহাওয়া দফতর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন