সমকালীন প্রতিবেদন : করতে হবে না বাড়তি টাকা পয়সা খরচা। তবু আয়েশে কাটবে জীবন। কি ভাবছেন? যে এমনটাও হয়? হ্যাঁ হয়। তবে সেই সুখের চাবিকাঠি থাকে না সবার হাতে। কিভাবে পৌছবেন আপনি ওই ঠিকানা পর্যন্ত? যেখানে জীবন কাটবে স্বর্গের মতো। সেটাও জানা থাকে না অনেকের। কিন্তু চিন্তা নেই, আজ আপনার সেই জটিল জীবনে সুখ খুঁজে দেওয়ার গুরু দায়িত্ব আমাদের। দিন থেকে রাত, ঘুম থেকে উঠে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত, জাস্ট কতগুলো সহজ নিয়ম মেনে চলুন। বাকি বিস্তারিত আজকের এই প্রতিবেদনে।
অনেকেই মনে করেন, অর্থই হল সুখের চাবিকাঠি। যাঁর জীবনে ধন-সম্পদের অভাব নেই, তাঁর আবার দুঃখ কী? আসলে এটাই বড় ভুল ভাবনা। আগে একটা সহজ কথা বুঝতে হবে আপনাকে। জীবনে বিলাস-বৈভব এক জিনিস, আর সুখে থাকা আর এক। আপনার জীবন কিভাবে আপনি সমৃদ্ধ করবেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার বিষয়। হাতে প্রচুর অর্থ নেই, ভোগ-বিলাসে কাটানোর মতো সম্পদও নেই, মানেই জীবন ডুবে যাচ্ছে অন্ধকারে এমনটা ভাবার কারণ নেই। অর্থ, প্রতিপত্তি না থাকা সত্ত্বেও জীবনে হওয়া যায় সমৃদ্ধশালী। ভাবছেন কিভাবে এটা সম্ভব? জাস্ট কতগুলো পয়েন্ট মানলেই ওই সুখের চাবিকাঠি আসবে আপনার হাতে।
এক, লাক্সারি নেই তো কি হয়েছে? এক কামরার ঘরও রুচিসম্মতভাবে সাজিয়ে তুলতে পারেন। অ্যাস্থেটিক ওয়েতে। রাখতে পারেন বইয়ের কালেকশন। সেই ঘরে নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারার তৃপ্তিও কম কী? কোনও এক অলস দিনে পছন্দের বই নিয়ে কাচের জানলা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে পারাও তো বিলাসিতা হতে পারে। অর্থের জন্য যিনি ক্রমাগত ছুটছেন, তাঁর কাছে এমন জীবনও খুব দামি হতে পারে। ভাল বই জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে পারে। তবে এই সবকিছুকে অনুভব করতে হবে। মন থেকে প্রতিটা মুহূর্তকে উপভোগ করতে হবে। তাহলে আনন্দের আর অভাব হবে না।
দুই, স্নানঘরটিও যদি একটু গুছিয়ে রাখা যায় আর সময় নিয়ে স্নান করা যায়, সেটাও কিন্তু আপনার শরীর এবং মনের ক্লান্তি দূর করতে পারে অনায়াসে। নিজেকে ভাল রাখার কৌশল হিসেবে বিলাসবহুল স্পা করান ধনীরা। কিন্তু কম অর্থেও সেই ভাললাগা নিজের মতো করে উপভোগ করা যায়। স্নানঘরে যদি একটি বাথটাব থাকে, আর ফুল, মোমবাতি, গাছ, সুগন্ধী দিয়ে সেই স্থান সাজিয়ে নেওয়া যায়, তাতেও কিন্তু স্পা-এর মতোই পরিবেশ তৈরি হতে পারে। আসলে শুধু এইভাবে সাজিয়ে তুললে হবে না। নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা থাকতে হবে ভেতর থেকে।
তিন, তাছাড়া ধরুন একটা সকাল শুরু করলেন একটু অন্যভাবে। সকালে উঠে পছন্দের এক কাপ চা বা কফিতে চুমুক দিতে পারার আনন্দ, প্রিয়জনের সঙ্গযাপন কিন্তু অর্থমূল্যের সঙ্গে তুলনার বিষয় হতে পারে না। জীবনে সুখী হওয়ার জন্য নিজের জন্য সময়, প্রিয়জনের সঙ্গ, মন খুলে কথা বলা, আড্ডা দেওয়া, এসবও কাজের ফাঁকে ভাল সময় কাটানোও জরুরি হতে পারে।
চার, মন ভাল করার আরও একটা উপায় হতে পারে পছন্দের পোশাক। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে দামি পোশাকশিল্পীদের নকশা করা পোশাক কিনলেই যে জীবন সুন্দর হয়, তা কিন্তু নয়। নিজের সাধ্যের মধ্যেও ভাল পোশাক কেনা যায়। দামী পোশাকের চেয়েও নতুন পোশাকের আনন্দটা যদি বড় হয়, তাহলে সাধ্যের মধ্যেই শখপূরণ করা যায়। শুধু আপনার মন থেকে ইচ্ছে থাকতে হবে, তাহলেই সব সম্ভব।
পাঁচ, টাকা থাকলে, ধনী হলে বিদেশ ভ্রমণ করা যায়। আবার মধ্যবিত্ত হয়েও তা নিয়ে আক্ষেপ না করে দেশেও ঘোরা যায়। বেড়ানো যায় নিজের রাজ্যেও। ভ্রমণের আনন্দ শুধু বিদেশ, বৈভবে লুকিয়ে থাকে না। প্রকৃতি উপভোগ, নতুন সংস্কৃতি, কোনও জায়গার খাদ্যাভ্যাস, মানুষজনকে জানার ইচ্ছাই যদি মুখ্য হয়, তা হলে কাছেপিঠে ভ্রমণও হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত আনন্দের। ভ্রমণপিপাসুরা যে কোনও নতুন স্থান ঘুরেই অসম্ভব তৃপ্তি অনুভব করেন। সেজন্য মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হয় না সব সময়।
অতএব নিজেকে ভালো রাখা শুধুমাত্র আপনার নিজের হাতে। তার জন্য বৈভবের প্রয়োজন নেই। নিজেকে ভালবাসুন, নিজের প্রতি যত্নশীল হোন, পরিবারের পাশাপাশি নিজের খেয়াল রাখুন নিজে। দেখবেন আপনার চারিপাশেই লুকিয়ে রয়েছে আপনার মন ভালো রাখার হাজারো এক উপায়। তারজন্য বাড়তি খরচের প্রয়োজন হচ্ছে না। শুধু সদিচ্ছার অভাব না হলেই হল। লক্ষ্য করবেন, সুখ থেকে কেউ আপনাকে দূরে সরাতে পারছে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন