Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫

খাবারের মাধ্যমে টেনশন, দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি

 

Relief-from-depression

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌স্ট্রেস, ডিপ্রেশন থেকে স্বস্তি মিলবে ঘরোয়া উপায়ে। কিভাবে ডিস্ট্রেস করবেন নিজেকে? থাকছে তিন তিনটে পদ্ধতি। সঙ্গে জানাবো খাবারের পাতে কি কি রাখবেন টেনশন, দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির জন্য? প্রতিবেদনের শেষে থাকবে একটা বিশেষ টিপস। 

টার্গেট, কম্পিটিশন, প্রযুক্তি নির্ভর দৈনন্দিন লাইফস্টাইল থেকে আনহেলদি খাবার দাবার, সঙ্গে প্রফেশনাল লাইফ থেকে পার্সোনাল লাইফের প্রেসার; আজকাল মানুষের চাপ বাড়াচ্ছে। বাড়ছে দুশ্চিন্তা, হচ্ছে স্ট্রেস। তাই কয়েকটা জিনিসে বদল আনা দরকার। যেমন–

১) প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর বেশ কিছুক্ষণের জন্য মেডিটেশন বা ধ্যান অভ্যাস করা জরুরি। আর ঘুম থেকে উঠে না পারলেও, দিনের যেকোনো একটা সময় রাখুন মেডিটেশনের জন্য। যাঁরা প্রথমবার ধ্যান শুরু করতে চলেছেন, তাঁরা অল্প সময় থেকে শুরু করুন এবং পরে ধীরে ধীরে সময়ের পরিমাণ বাড়ান। প্রথমে ৫ মিনিট দিয়ে মেডিটেশন শুরু করুন। তারপর সময় বাড়াতে হবে। মেডিটেশনের সময় হাল্কা মিউজিক চালিয়ে নিতে পারেন। চাইলে ঘর অন্ধকারও রাখতে পারেন। যতক্ষণ বেশি সময় মেডিটেশন করতে পারবেন ততই লাভ হবে। ধীর, স্থির, শান্ত হবে আপনার মন। মেজাজ শান্ত থাকবে। লক্ষ্য করে দেখবেন, স্ট্রেস সামাল দেওয়ার ক্ষমতাও বাড়বে।

২) আপনাকে নিয়মিত যোগাসন অভ্যাস করতে হবে, এতে স্ট্রেসের মাত্রা কমবে। শরীর, মন চাঙ্গা হবে। স্ট্রেস হলেও তা সহজেই কন্ট্রোল করতে পারবেন। তাই প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০ মিনিট করে যোগাসন অভ্যাসের চেষ্টা করুন। তবে অতি অবশ্যই যোগা টিচার বা প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে। আরেকটা জিনিস মাথায় রাখবেন, সহজ যোগাসন পোজ নিজে নিজে করলেও জটিল যোগাসন প্রশিক্ষকের পরামর্শ ছাড়া করতে যাবেন না, কারণ এর জেরে চোট-আঘাতের সম্ভাবনা থেকে যায়। 

৩) মানুষ নয়, বিশেষ একজনের সাথে সময় কাটান। পরিষ্কার করে বলছি। বাড়িতে পোষ্য থাকলে তাদের সঙ্গে যতটা বেশি সম্ভব সময় কাটান। পোষ্যদের সঙ্গে সময় কাটালে মন ভাল থাকে সবসময়। ওরা অবলা জীব হলেও আপনার মনখারাপ সবচেয়ে বেশি বুঝতে পারে পোষ্যই। এছাড়াও, স্ট্রেসের মাত্রা খুব বাড়লে সম্ভব হলে ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে তা শেয়ার করুন। আসলে অনেক সময়ই শেয়ার করলে মানসিক চাপ এর সমস্যা কমে। 

এগুলো তো রইলো ঘরোয়া পদ্ধতি। যা স্ট্রেস, ডিপ্রেশন হওয়ার আগেই আপনার শুরু করা উচিত প্রতিদিন নিয়ম করে। এছাড়াও খাওয়া-দাওয়াতে আনুন বদল। ভালো করে লক্ষ্য করলেই বুঝবেন, মানসিক চাপ বেশি হলে হাই ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায়। চকলেট, বিরিয়ানি, পিৎজা বার্গার; মানে যেগুলো আপনার কমফোর্ট ফুড সেগুলো থেকেই তখন আপনাকে বেরোতে হবে। মন টানলেও ওগুলো খাওয়া যাবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, আলট্রা প্রসেসড ফুড, উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার, চা-কফি, এনার্জি ড্রিংক্সের মতো ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় অ্যাংজাইটি ও স্ট্রেস বাড়ায়। 

তাই শরীর চর্চা ছাড়া খাওয়া-দাওয়া নিয়েও সচেতন থাকতে হবে। চিপস, কুকিজের বদলে বাদাম, ফল রাখুন পাতে। এছাড়া ব্যালান্সড ডায়েট মেনে চলা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে খুব জরুরি। আর একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, স্ট্রেস কম হোক বা বেশি, খাবার বেশি খান বা কম, তিনবেলার খাবার মিস করা চলবে না। প্রোটিন, ফাইবার, কার্বস– খাবার পাতে এই সব পুষ্টি থাকা চাই। এছাড়া ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার মানসিক চাপ কমাতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদদের একাংশ বলছেন, খুব বেশি স্ট্রেস হলে একটা কলা খেয়ে নিন। কলা পেটকে ভর্তি রাখে এবং এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া যাঁরা অ্যাংজাইটি প্রবণ হন, মারাত্মক মানসিক চাপে থাকেন, তাঁদের প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কুমড়োর দানা বা আমন্ড খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিবিদদের তরফে। 

পুষ্টিবিদের সংযোজন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ক্যামোমাইল টি খেলে, চা কফির বদলে হার্বাল টি খেলে অ্যাংজাইটি কমে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে জল খেলে কিংবা গরমে ডিটক্স ওয়াটার খেলেও মানসিক চাপ এড়ানো যায়। একইসঙ্গে আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন ডার্ক চকলেট, টক দই, বিটরুট, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর মাছ, ফ্ল্যাক্স সিড বা তিসি বীজ, আখরোট। খেতে পারেন গ্রিন টি-ও। জেনে রাখুন, মানসিক অবসাদ কমায় মুসুর ডাল, বিনস, মটরশুঁটি, ম্যাচা বা সবুজ চায়ের পাতার গুঁড়ো, আপেল, ন্যাশপাতি, লেবু, সবুজ শাকসবজি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি। তবে মনে রাখবেন স্ট্রেস যদি মাত্রাতিরিক্ত হয় তাহলে অতি অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কোনওভাবেই অবহেলা করা যাবে না।‌‌‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন