Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

বা‌গদার পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশে পুশব্যাকের অভিযোগ মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধে

 

Migrant-worker

সমকালীন প্রতিবেদন : পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়ে চরম বিপদের মুখে পড়লেন বাগদা থানার রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিহরপুর গ্রামের যুবক ফজের মন্ডল ও তাঁর স্ত্রী তাসলিমা মন্ডল। অভিযোগ, তাদের ভারতের নাগরিকত্বের সমস্তরকম নথি দেখানো সত্ত্বেও মহারাষ্ট্র পুলিশের নির্দেশে একটি বাংলাদেশি পুশব্যাক দলে তাঁদেরকেও জোর করে পুশব্যাক করা হয়েছে বাংলাদেশে।

পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ফজের মন্ডল মহারাষ্ট্রের নয়ানগর থানার এলাকায় শ্রমিকের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। গত ১০ জুন রাতে তিনি বাড়িতে ফোন করে জানান, তাঁর নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বাবা তাহাজুল মন্ডল ও মা লতিফা মন্ডল জন্ম শংসাপত্র, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও পোলিও কার্ড সহ যাবতীয় নথি পাঠিয়ে দেন।

কিন্তু অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের নয়ানগর থানার পুলিশ নথিপত্র পাওয়ার পরও তা ছিঁড়ে ফেলে দেয় এবং গভীর রাতে ফজের ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করে। পরে তাদেরকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে একটি বাংলাদেশি নাগরিকদের পুশব্যাক দলে অন্তর্ভুক্ত করে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার সকালে হঠাৎ করেই বাংলাদেশের দিনাজপুরে অবস্থিত বিজিবি ক্যাম্প থেকে ফজেরের পরিবারের কাছে ফোন আসে। ফোনে জানানো হয়, ফজের ও তাঁর স্ত্রী বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছেন এবং তাঁদেরকে পুশব্যাক করা হয়েছে।

ফজেরের বাবা তাহাজুল মন্ডল জানান, 'আমি দীর্ঘদিন ধরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্ণাটকে কাজ করি। দুমাস আগে ছেলেকেও সেখানে শ্রমিকের কাজের জন্য নিয়ে যাই। এরপর সে সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজ করতে চলে যায়। স্ত্রীকেও সেখানে নিয়ে যায়। ছেলে এবং বৌমা দুজনেই ভারতীয়। তারপরেও মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের সঙ্গে এই অন্যায় আচরণ করেছে।'‌

এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রতিবেশীরাও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, '‌এটা কেবল একজন ব্যক্তির সমস্যা নয়, গোটা দেশের নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকারের ওপর প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিচ্ছে।' ফজেরের পরিবার কাতর আবেদন জানিয়েছে, দ্রুত যেন তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং যাঁদের গাফিলতিতে এই অন্যায় ঘটেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। 

ইতিমধ্যেই পরিবারের পক্ষ থেকে বাগদা থানায় সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে। ঘটনার পরে এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে মানবাধিকার কর্মী ও আইনজ্ঞ মহলের দাবি, একটি স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হোক এবং নিশ্চিত করা হোক যে, আর কোনও ভারতীয় যেন এই ধরনের প্রশাসনিক গাফিলতির শিকার না হন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে, 'ভারতীয় নাগরিক হয়েও কীভাবে একজন পরিযায়ী শ্রমিককে অন্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব?' এখন সবার নজর প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন