সমকালীন প্রতিবেদন : পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের বাসিন্দা গোকুল চন্দ্র দাস। তাঁর এই সম্মানপ্রাপ্তির খবর ইতিমধ্যেই সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। আর সেই খবরে উচ্ছসিত তাঁর পরিচিতরা। অপেক্ষা ছিল এলাকায় ফেরার। দিল্লি থেকে এলাকায় ফিরতেই সসম্মানে তাঁকে বরণ করে নিলেন এলাকার মানুষ।
ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে পথচলা শুরু। বাবার প্রেরণায় ঢাকের কাঠিতে বোল তুলতে শুরু করেছিলেন মাত্র চার বছর বয়সেই। ধীরে ধীরে রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে ঢাকি শিল্পী হিসেবে নিজের প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। অবশেষে ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্মান 'পদ্মশ্রী' উপাধি পেয়ে স্বপ্নপূরণ ঘটলো। ঢাকি সম্রাট বাংলার মুখ উজ্জ্বল করে বাড়ি ফেরার পরেই উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলো গোটা এলাকা।
বিভিন্ন সময়ে এই ঢাকি সম্রাটকে দেখা গিয়েছে রিয়ালিটি শোতে ঢাক সহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র বাজাতে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মছলন্দপুরের বিধানপল্লীর বাসিন্দা ঢাকি সম্রাট গোকুল চন্দ্র দাস। ২০২৫ পদ্মশ্রী প্রাপকের তালিকায় নাম উঠে আসে মছলন্দপুরের এই ঢাকি সম্রাটের। আজ, ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার বাড়িতে ফেরেন তিনি। ট্রেনে করে মছলন্দপুর স্টেশনে নামতেই উচ্ছ্বাসে মেতে পড়েন মসলন্দপুর এলাকার আপামর জনগণ।
ফুলের মালা, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জনস্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ অজিত সাহা। ঢাকি সম্রাট গোকুল চন্দ্র দাসের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে মছলন্দপুর স্টেশন থেকে পদযাত্রা করে মছলন্দপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে বাড়িতে পৌঁছান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন দেড়শো জন মহিলা ঢাকি ও নৃত্যশিল্পী।
মছলন্দপুরের সমস্ত রাস্তাজুড়ে দুই ধারে উপস্থিত সাধারণ মানুষেরা পুষ্পবৃষ্টির মাধ্যমে তাঁকে বরণ করে নেন। তাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত পুরুষ এবং মহিলা ছাত্রছাত্রীরা। যে স্কুল থেকে তিনি পড়াশোনা করেছেন, সেই স্কুলের সামনে আসতেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাঁর সঙ্গে করমর্দন করে, ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। গোকুল চন্দ্র দাস বাড়িতে পৌঁছেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন তাঁর ইচ্ছের কথা।
সরকারের কাছে আবেদন করেছেন ঢাকি আকাদেমির খোলার, যেখানে বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ঢাক বাজানোর। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের জন্য রয়েছে বই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ঢাক প্রশিক্ষণের জন্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কোন লিখিত বই। এবার সেই অসাধ্যসাধন করতে চলেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই বই লেখার কাজ অর্ধেকের বেশি হয়ে গেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন