সমকালীন প্রতিবেদন : সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ উঠলো দুই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। ওই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন খোদ বিডিও। বনগাঁ ব্লক উন্নয়ন দপ্তরের এমন কান্ডে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
রাজ্যের দরিদ্র মানুষদের জন্য রাজ্য সরকার 'বাংলার বাড়ি' নামে একটি আবাস যোজনা প্রকল্প চালু করেছে। অভিযোগ, এই প্রকল্পের অপব্যবহার করা হচ্ছে। যারা এই প্রকৃত প্রাপক, তাদেরকে বঞ্চিত করে অন্যদেরকে এই প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ করে আসছিলেন।
আর এবার খোদ বিডিও এই অভিযোগ আনলেন। শুধু তাই নয়, পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করলেন। তাও আবার বিডিও অফিসেরই দুই সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন সঞ্জয় বোস এবং বিশ্বজিৎ মিত্র। তাঁরা বনগাঁ বিডিও অফিসের কর্মী। আর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বনগাঁর বিডিও কৃষ্ণেন্দু ঘোষ।
বিডিও তাঁর অভিযোগপত্রে লিখেছেন, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করে অন্যদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকানো হয়েছে। অভিযোগপত্রে দুটি উদাহরণও দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, জয়া বিশ্বাস নামে যে প্রাপকের অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ঢোকার কথা, তার জায়গায় রাজকুমার বিশ্বাস নামে আর একজনের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢুকেছে।
একইভাবে রামপ্রসাদ সরকার নামে এক প্রকৃত প্রাপকের বদলে রামপ্রসাদ সিংহ নামে আর একজনের অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের টাকা ঢুকেছে। অভিযোগপত্রে অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে সেই টাকা ফেরতেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে যাদের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, সেইসব সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থাগ্রহনের আবেদন জানিয়েছেন বিডিও।
এব্যাপারে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, 'রাজ্য সরকারের প্রকল্পের টাকা সরকারি কিছু অসাধু কর্মীর কারণে প্রকৃত প্রাপকেরা বঞ্চিত হয়ে অন্যদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে। এই ধরনের একাধিক অভিযোগ কানে আসার পর বিডিওকে এব্যাপারে খোঁজখবর নিতে বলেছিলাম। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার কথা বলেছি।'
অন্যদিকে, বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার অভিযোগ, 'কেন্দ্র বা রাজ্যের যে প্রকল্পই হোক, তা নয়ছয় করার বরাত নিয়েছে তৃণমূল নেতা, কর্মীরা। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু সরকারি কর্মী। ফলে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এর বিরুদ্ধে আমরা আগাগোড়াই অভিযোগ জানিয়ে আসছি। এবার তার সত্যতা প্রমানিত হল।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন