সমকালীন প্রতিবেদন : বাংলায় বৈশাখ মাস ধর্মীয় দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নানা উৎসব, অনুষ্ঠান, ব্রত, পার্বণে ভরা এই মাস। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ পূর্ণিমা উৎসব পালিত হয়। এই পূর্ণিমায় অনেকে উপবাস রাখেন। গঙ্গা স্নান করেন।
এই পূর্ণিমায় দান ধ্যানেরও বিশেষ গুরুত্ব আছে। আবার একইভাবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনটির গুরুত্ব বিশাল। এবার বুধবার, ২২ মে সন্ধে ৬ টা ৪৭ মিনিট থেকে পূর্ণিমা লাগছে। তিথি থাকছে পরদিন ২৩ মে বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত। সন্ধে ৭ টা ২২ এ শেষ হবে।
যেহেতু ২৩ মে-ই সূর্যোদয় পাওয়া যাচ্ছে, বুদ্ধ পূর্ণিমা ২৩ মে পালিত হবে। কিন্তু কেন এই দিনটি এত গুরুত্বপূর্ণ? লোককথা বলছে, এই পূর্ণিমায় ভগবান বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে সিদ্ধার্থ জন্মগ্রহণ করেন।
৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনেই তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে মহাবোধি লাভ করেন। আবার ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এদিনেই তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। তাই এদিনের গুরুত্ব বৌদ্ধদের কাছে অসীম।এই বছর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে ভগবান বুদ্ধের ২৫৮৬-তম জন্মবার্ষিকী।
এবছর বুদ্ধ পূর্ণিমায় ৩ টি শুভ যোগ গঠিত হচ্ছে এবং ভাদ্র বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে পরিঘা যোগ, শিব যোগ এবং সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ গঠিত হচ্ছে। এর কারণে ভাগ্য চমকাবে অনেকেরই। কিন্তু তার জন্য করতে হবে কয়েকটি কাজ।
কি কি করলে ভাগ্য বদল ঘটবে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন? জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, বুদ্ধ পূর্ণিমায় সত্য, মানবতা এবং মুক্তির আরাধনা করা হয়। তাই বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপনের সময় খাঁচায় বন্দী পাখি ও প্রাণিদের মুক্ত করা উচিত। এদিন আপনার বাড়ির বন্দি পাখি বা প্রাণীকে মুক্ত করতে পারেন।
এছাড়াও, এদিন বোধিবৃক্ষে ফুল ও পতাকা লাগান এবং এর চারপাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন। এগুলির পাশাপাশি পূর্ণিমা থাকাকালীন গাছের শিকড়ে পবিত্র জল ঢেলে অন্তরের শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। এই দিনে ধ্যান করলে মনে শান্তি আসে।
তবে শুধু ধ্যান নয়, জ্ঞানও দরকার। তাই এদিন গৌতম বুদ্ধের জীবনদর্শন সংক্রান্ত বই পড়ুন ও আত্মস্থ করুন। পাশাপাশি, দিনটিতে বুদ্ধ মূর্তির সামনে ফুল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ করলেও উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়াও, এদিন ঘরের পবিত্রতা বজায় রাখুন, দরিদ্রদের সাধ্যমতো দান করুন এবং সম্ভব হলে অহিংসতার প্রতীক হিসেবে, এই দিনে নিরামিষ খান। এতে আপনার জীবনেও ফুটবে সৌভাগ্যের ফুল।
প্রতিবেদনটি তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। কোনোরূপ কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দেওয়া ই-সমকালীনের উদ্দেশ্য নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন