Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩

আরও নতুন লিথিয়াম খনির সন্ধান মিললো ভারতে

 ‌

Lithium-mining-exploration

সম্পদ দে : ‌একের পর এক লটারি পেয়েই চলেছে ভারত। এ যেন ঈশ্বরের এক ইঙ্গিত, যার মাধ্যমে তিনি বোঝাচ্ছেন, ভারত হতে চলেছে ২১ শতকের অন্যতম শক্তিশালী দেশ। তবে কি এমন সুখবর, যার কারণে আবারও মেতে উঠেছে সাধারণ জনগণ থেকে গোটা সরকারি মহল?

ভারতের খনিজ সম্পদের একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়নে আবারও একটি লিথিয়াম খনি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে একটি সম্ভাব্য বৈশ্বিক খেলোয়াড় হিসেবে দেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করে তুলছে। হোয়াইট গোল্ড বা সাদা সোনা নামে পরিচিত লিথিয়াম বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন সহ আধুনিক শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। 

লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে ব্যবহারের কারণে এর উচ্চ চাহিদা রয়েছে বাজারে। সাম্প্রতিক এই আবিষ্কারগুলি ভারতের শক্তির উত্তরণ এবং স্বয়ংসম্পূর্ণতার সন্ধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপকে চিহ্নিত করে৷ ভারতের প্রথম লিথিয়াম খনিটি এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু ও কাশ্মীরে উন্মোচিত হয়েছিল, যা কিনা ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল।  

পরবর্তীকালে, মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই রাজস্থানও তার নিজস্ব লিথিয়াম খনির সঙ্গে যোগ দেয় এই তালিকায়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলির ইঙ্গিত বলছে, এই অঞ্চলে খোঁজ পাওয়া লিথিয়াম জম্মু ও কাশ্মীর উপত্যকায় পাওয়া খনিজগুলিকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন পাওয়া খনিগুলি দেশের লিথিয়ামের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ একাই পূরণ করার ক্ষমতা রাখে৷

ভারতের খনিজ সম্পদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা খনি মন্ত্রক এই অসাধারণ আবিষ্কারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। উদীয়মান সবুজ অর্থনীতিতে অর্থাৎ ইলেকট্রিক নির্ভর ভবিষ্যতে লিথিয়ামের কৌশলগত গুরুত্ব এই খনিগুলির খোঁজ পাওয়ার পরে আরও বেড়ে গেছে। 

কেন্দ্রীয় খনন মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনকে লিথিয়াম এবং সোনার ৫১টি খনিজ ব্লক হস্তান্তর করার অনুমোদন দিয়েছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হল, লিথিয়াম নিষ্কাশন শুরু করার প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুততর করা এবং দেশীয় ব্যাটারি শিল্পের বৃদ্ধিকে সহজতর করা।

:‌ এই সংক্রান্ত ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :‌

বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন যে, জম্মু ও কাশ্মীরের লিথিয়াম খনিতেই প্রায় ৫৯ লক্ষ টন লিথিয়ামের বিশাল মজুদ রয়েছে। সেখানে রাজস্থানে পাওয়া এই খনিতে জম্মু ও কাশ্মীরের থেকেও অনেক বেশি লিথিয়াম মজুত রয়েছে। এই ধরনের বিশাল সরবরাহ ভারতে ব্যাটারি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে এবং স্বয়ংচালিত এবং অন্যান্য ব্যাটারি-নির্ভর সেক্টরগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত খরচগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।

আবিষ্কারটি ইভি বাজারের জন্য বিশেষভাবে আশাব্যঞ্জক। কারণ এটি সাশ্রয়ী মূল্যের বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য পথ প্রশস্ত করতে পারে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতে দেশের প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে পারে।

ভারতের ভেতরেই লিথিয়ামের এই বিশাল মজুত বিদেশী আমদানির উপর দেশের নির্ভরতা কমিয়ে ভারতের 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রজেক্টকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। যেহেতু ভারত তার ইভি বাজার প্রসারিত করে চলেছে। তাই লিথিয়ামের একটি এত বড় এবং ভরসাযোগ্য সরবরাহ দেশের উন্নয়ন আরও বেশি করে নিশ্চিত করে।

এই অতিরিক্ত লিথিয়াম খনির আবিষ্কার বিশ্বব্যাপী লিথিয়াম বাজারে ভারতের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দেশে নতুন পাওয়া খনিজ সম্পদ নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে উৎসাহিত করতে পারে এবং দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে জোরদার করতে পারে।

যেহেতু ভারত একটি সবুজ ভবিষ্যতের দিকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করেছে, তাই সেখানে এই লিথিয়াম খনিগুলির আবিষ্কার বর্তমান বিশ্ববাজারে ভারতের পা আরও বেশি মজবুত করবে বলেই আশা বিশেষজ্ঞদের। দেশের প্রতিটি মানুষ এই সময় অধীর আগ্রহে লিথিয়াম নিষ্কাশন শুরুর জন্য অপেক্ষা করছে। কারণ, এটি ভারতের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, শক্তি এবং সুরক্ষার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে।




‌‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন