Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

পুষ্টিগুণ পেতে নিয়ম মেনে ডিম খান

 

Eat-eggs-according-to-the-rules

সমকালীন প্রতিবেদন : ডিম হলো এমন একটি খাবার, যাকে আমরা চিনি শরীরে প্রোটিনের পরিপূরক হিসেবে। বহু বছর ধরেই হিন্দি দুই লাইনের একটি ছড়া আমরা শুনে আসছি। "সানডে হো ইয়া মানডে, রোজ খাও আন্ডে।" যার মানে হলো, 'রবিবার হোক বা সোমবার, রোজ একটি করে ডিম খাওয়া উচিত'।

অনেক চিকিৎসকেরা বলেন, প্রত্যেকটি মানুষের প্রতিদিন একটি করে ডিম তো অবশ্যই খাওয়া উচিত, কিন্তু এই ডিম খাওয়া নিয়েও সমাজে ছড়িয়ে আছে অনেক রকমের মিথ। কেউ বলেন, প্রতিদিন ডিম খাওয়া অবশ্যই উচিত, আবার কেউ বলেন ডিম খেলেই নাকি বাড়বে কোলেস্টেরল।

আসুন জেনে নেওয়া যাক, ডিম খাওয়ার কিছু উপকারিতা এবং তার কিছু সাবধানতা—

ডিমের উপকারিতা জানার আগে আমাদের জানতে হবে, ডিমে কি কি থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।

ডিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, উপকারী ফ্যাট, কোলিন নামক একটি উপাদান, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি সিক্স ও বি টুয়েলভ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, লিন প্রোটিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রভৃতি। 

এবার আসা যাক ডিমে এই সমস্ত উপাদানের উপস্থিতির কারণে আমরা শারীরিকভাবে কি কি উপকারিতা পেতে পারি।

১| ডিমে আছে প্রচুর ভিটামিন ডি, যা কিনা হাড়কে শক্ত করে ও ক্যালসিয়ামকে ধরে রাখে। এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি ক্যান্সার সেলের বৃদ্ধিকে আটকায়।

২| উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে রক্ষা করে, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে।

৩| ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টকে সুস্থ এবং কার্যকারী রাখতে সাহায্য করে।

৪| লিন প্রোটিন ও অ্যামাইনো অ্যাসিড ওজন কমায় এবং শরীরের পেশীগুলির বৃদ্ধি ঘটায়।

৫| কোলিন হলো এক প্রকার অপরিহার্য পুষ্টি, যা কিনা ডিমে ভরপুর পরিমাণে থাকে। কোলিন মস্তিষ্ককে ও তার নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ রাখে। রোজ মাত্র দুইটি করে ডিম শরীরে কোলিনের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।

এইগুলি ডিমের উপকারিতা। তবে এর সঙ্গে আমাদের কিছু সাবধানতা সম্পর্কেও জেনে রাখা প্রয়োজন।

কারোর শরীরে যদি অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকে, তবে তাকে কুসুম বাদ দিয়েই ডিম খাওয়া উচিত। ডিমের সাদা অংশে কোনও সমস্যা নেই তাদের জন্য। তবে কুসুম প্রেমীদের দুঃখ পাওয়ার কোনও কারণ নেই। পুষ্টিবিদদের দাবি, সপ্তাহে দুই থেকে তিনটি কুসুম খেতেই পারেন আপনারা। হার্টের রোগীরাও ডিমের সাদা অংশটি খেতে পারেন নিশ্চিন্তে। তবে কুসুম খেতে ইচ্ছে হলে ওইভাবেই মাঝে মাঝে সপ্তাহে দুইটি কুসুম খেতেই পারেন।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতিটি ডিমে পাওয়া যায়, প্রায় ১৪৩ ক্যালারি এনার্জি, যা কিনা শরীরে শক্তি যোগানোর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়াও প্রতিটি ডিমে থাকে প্রায় ৯.৫১ গ্রাম ফ্যাট, ১২.৫৫ গ্রাম প্রোটিন, ০.৭২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১৩৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৯৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস এবং ১.২৯ মিলিগ্রাম জিঙ্ক।

ডিমে উপস্থিত এতগুলি উপকারী উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেই জন্য চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন, শরীরে হাড় মজবুত রাখার জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খেতে।

জিম করা এবং নিজেদের শরীর চর্চা করা প্রতিটি ব্যক্তি দিনে অন্তত একটি করে ডিম খেয়েই থাকেন। এছাড়াও অ্যানিমিয়া রোগে ভোগা রোগীকেও ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তারেরা। 

ডিম সম্পর্কে ছড়িয়ে থাকা বেশ কিছু মিথ ও বাস্তবে ডিম খাওয়ার কতরকম উপকারিতা সেই সম্পর্কে জানা গেল। তবে ডিম খাওয়ার সময় যেমন প্রত্যেককেই কয়েকটি সাবধানতা মেনে চলা উচিত, তেমনি এই সাবধানতা মেনে চললে ডিমই হয়ে উঠবে আপনাদের শরীরের জন্য এক অন্যতম বন্ধু।



‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন