Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩

মুসার পরিবারের সদস্য সংখ্যা একটি গ্রামের সমান

 

A-member-of-Musa-family

সমকালীন প্রতিবেদন : গোটা পৃথিবীতে এমন কিছু খবর থাকে, যেগুলি কিনা প্রতিদিনকার সাধারণ খবরগুলির থেকে আলাদা এবং আশ্চর্যজনক, তাকেই বলা হয় অফবিট নিউজ। কিছুদিন আগেই আপনারা এমনই একটি অফবিট নিউজ দেখেছিলেন যে, কিভাবে একজন লোক কেবলই বোর হচ্ছিলেন বলে ডাকাতি করতে বেরিয়েছিলেন। 

তবে আজকের অফবিট নিউজটি এই খবরকেও পেছনে ফেলে দেয়। বৈবাহিক জীবন হলো প্রত্যেকের জীবনেরই একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিয়েকে বলা হয়ে থাকে একটি ছেলে ও মেয়ের নতুন জীবনের শুরু। একটি ছেলে ও মেয়ের একে অপরের সঙ্গে বিয়ে হয় ও ভবিষ্যতে তারা তাদের সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে বাস করে।

কোথাও কোথাও আবার ধার্মিক বা সাংস্কৃতিক কারণে অনেকের ২-৩ জন স্ত্রীও থাকে বটে। তবে উগান্ডার মুসা হাসাইয়ের এই পরিমাণটি পোষাইনি মোটেও। ১, ২ জন বা ৩ জন নয়, পুরো এক ডজন স্ত্রী অর্থাৎ মোট ১২ জন স্ত্রীকে নিয়ে সংসার ৭০ বছর বয়সী মুসার! প্রত্যেক স্ত্রীকে তিনি এবার কড়া ভাষায় বলে দিয়েছেন যে, আর নয়! এবার থেকে গর্ভনিরোধক ওষুধ খেতে হবে সকলকে। তবে যতদিনে এই সুবুদ্ধি হয়েছে, ততদিনে নয় নয় করে ১০২ জন সন্তানের বাবা হয়ে গেছেন তিনি।

প্রত্যেক দাদু–ঠাকুমার ইচ্ছে থাকে, তারা নাতি-নাতনিদের সঙ্গে খেলবেন এবং সময় কাটাবেন। মুসারও সেই ইচ্ছা ছিল বটে, তবে তার নাতি–নাতনিদের সংখ্যা সাধারণ লোকজনের থেকে সামান্য একটু বেশি। মাত্র ৫৬৮ জন। ঠিকই শুনেছেন। পরিমাণটা একটি পরিবারের, গোটা গ্রামের নয়। 

তবে মুসা হাসাই এর পরিবারটিও গোটা গ্রামের থেকে কম কিছু নয়। বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী মুসা তার জীবনের প্রথম দিকে চেয়েছিলেন, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাড়ুক। প্রয়োজনের থেকে অনেকটা বেশিই আয় করতেন মুসা। সেই জন্য পরিবারের বৃদ্ধি নিয়ে বেশি মাথা ঘামাননি তিনি। তবে যতক্ষণে তিনি সমস্যা সম্পর্কে বুঝতে শুরু করেছেন, ততক্ষণে লাগাম ছাড়া হয়ে গেছে বিষয়টি। 

মুসার ১২ জন স্ত্রীর মধ্যে প্রত্যেকেই গর্ভধারণের সক্ষম এখনও। ফলে তাদেরকে গর্ব নিরোধক ওষুধ খাওয়ার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এত বছর বাদেও শ-খানেক সন্তান ও নাতি-নাতনি হওয়ার পরে হঠাৎ মুসার সম্বিত ফেরার কারণ কি? ১৯৭১ সালে জীবনের প্রথম বিয়ে করেন মুসা। তখন সবে ১৬ বছর বয়স তার। প্রচুর পৈত্রিক সম্পত্তি থাকায় এবং পেশায় ব্যবসায়ী মুসার প্রচুর আয় থাকায় পরিবার নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা করেননি তিনি। 

১৯৭১ এর পর থেকে একের পর এক বিয়ের ইতিহাস গড়তে থাকেন তিনি। বর্তমানে ১০২ জন সন্তান এবং ৫৬৮ জন নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভরা সংসার তার। তবে বর্তমানে আয়ে টান পড়েছে তার। আর সেটাই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মুসার জন্য।

আবেগ ও শরীরী কামনার কারণে কখন যে ১০২ জন সন্তানের বাবা হয়ে গেছেন মুসা, তা তার খেয়াল নেই। এমনকি এই বয়সে এসে তার ৫৬৮ জন নাতি-নাতনির নাম তো দূরের কথা, তার সন্তানদের নাম পর্যন্ত মনে থাকে না মুসার। জীবনে কোনও কিছুর বাড়াবাড়িই যে ভালো না তা অনেক পরে বুঝতে পেরেছেন মুসা। 

গ্রামের মোড়ল মুসা। বিরাট বাড়ি তার। প্রতিটি স্ত্রীর জন্য আছে আলাদা আলাদা ঘর। প্রথম থেকেই আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত ক্ষমতাবান মানুষ মুসা। তবে সেই ক্ষমতাবান মুসাই আজ চিন্তার মুখে পড়েছেন তার পরিবারের অপ্রাপ্তবয়স্কদের পড়াশোনা ও প্রত্যেকের মুখে কি করে খাবার তুলে দেবেন সেই ভাবনা নিয়ে।

সরকারের কাছে সাহায্য পর্যন্ত চাইছেন তার পরিবারের প্রতিপালনের জন্য। তার কথায়, তার সীমিত আয় নিয়ে তিনি আর নিজের পরিবারের প্রতিপালন করতে পারছেন না। মুসার প্রথম স্ত্রী হাসিনা জানান, এই পরিস্থিতি নিয়ে তারা ১২ জন স্ত্রীই অত্যন্ত বিব্রত। স্বামীর আরো ১১ জন স্ত্রী থাকলেও কখনো কারোর মধ্যে কোন ঝামেলা হয়নি একবারও। প্রত্যেকেই সুখে শান্তিতে থেকেছে। 

স্বামীর আর্থিক সমস্যা নিয়ে চিন্তা থাকলেও বৃদ্ধা হাসিনার বক্তব্য, 'সমস্যা থাকলেও সব চলে তো যাচ্ছে'। আসলেই সব চলে যাচ্ছে ও চলতে থাকবে। তবে মুসার ও তার স্ত্রীর মতো এইরকম 'চলে যাচ্ছে' ভাবনা-চিন্তা আছে আরও অনেকের মধ্যেই। ফলে আগামীতেও এই ভাবেই কেবলমাত্র চলতেই থাকবে ও পৃথিবী এত মানুষের চাপে নুইয়ে পড়বে ধীরে ধীরে।





‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন