সমকালীন প্রতিবেদন : সাধারণভাবে ফুল প্রায় ওজনহীন একটি সামগ্রী হিসেবে দেখা যায়। কিন্তু একটি ফুলের ওজন ১০ কিলোগ্রাম, এমন শুনলে স্বাভাবিকভাবেই অবাক হতে হয়। এই পৃথিবীতেই এমন ফুলের অস্তিত্ব আছে। আর এই ফুলই আপাতত পৃথিবীর বৃহত্তম ফুল হিসেবে পরিচিত।
দ্বীপভুমি ইন্দোনেশিয়া। আর এই দেশেই পৃথিবীর বৃহত্তম ফুলের সন্ধান পাওয়া যায়। এই ফুলের নাম র্যাফ্লেসিয়া। আর এই ফুলটি ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় ফুলের স্বীকৃতি পেয়েছে। যতদূর জানা গেছে, এই ফুলের মোট ২৮ টি প্রজাতি রয়েছে।
বছর দুয়েক আগে ইন্দোনেশিয়ায় একবার এই প্রজাতির ফুল পাওয়া গিয়েছিল। সেই ফুলের ব্যাস ছিল সাড়ে ৩ ফুটের মতো। ওজন ছিল ১০ কেজিরও বেশি। ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রা এলাকাতেও একবার একটি র্যাফ্লেসিয়ার সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। আর সেটির ব্যাস ছিল ১০৭ সেন্টিমিটার।
সত্যজিৎ রায়ের একাধিক কল্পবিজ্ঞানমূলক উপন্যাসে মানুষখেকো গাছের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পোকামাকড় গিলে ফেলা ফুলও যে আছে, তা সচরাচর শোনা যায় না। ইন্দোনেশিয়ায় সন্ধান মেলা এই র্যাফ্লেসিয়া ফুলের সেই গুন আছে।
র্যাফ্লেসিয়া প্রজাতির এই ফুলের মুল অংশটি দেখতে কলসীর মুখের মতো। পাশে আরও কয়েকটি পাপড়ি আছে। এই ফুলের গন্ধ অনেকটা পচা মাংসের মতো। আর সেই গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় যেই এই ফুলের মুখে এসে বসে, তখনই ফুলের মাঝের গর্তে থাকা আঠা তাদের শরীরে লেগে যায়।
একবার এই ফুলের গায়ে এসে বসলে, সেই পোকার আর উড়ে যাওয়ার ক্ষমতা থাকে না। আর তখনই ফুলটি ওই পোকার দেহের নির্যাস শুষে নেয়। ফলে একসময় মৃত্যু হয় সেই পোকার। আর এই কারণেই এই ফুল মাংসাশী ফুল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
এই ফুলের নামকরণের পিছনে রয়েছেন এক ইংরেজ সাহেব। বহু বছর আগে তিনিই এই ফুল প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন। আর ইন্দিনেশিয়াতেই তিনি এই ফুল খুঁজে পেয়েছিলেন। ওই ইংরেজ সাহেবের নাম ছিল স্যার স্যামফোর্ড র্যাফ্লেস।তারথেকেই এই ফুলের নামকরণ হয়েছে র্যাফ্লেসিয়া।
বৈচিত্র্যে ভরা এই পৃথিবী। সৃষ্টিকর্তা সেই পৃথিবীকে বিচিত্রভাবে গড়ে তুলেছেন। আর তেমনই এক বৈচিত্র্যময়, আশ্চর্য ফুল এই র্যাফ্লেসিয়া। প্রকৃতির আজব খেয়ালে পৃথিবীর এক প্রান্তেই শুধু দেখা মেলে এই ফুলের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন