সমকালীন প্রতিবেদন : সোস্যাল মিডিয়ায় আলাপ। তাও আবার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে। আর এভাবেই ঘনিষ্ঠতা। সেই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে শুরু হয় প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেইলিং। দিন দিন লোভ বাড়তে থাকে প্রেমিকের। এভাবেই দিনের পর দিন চলতে থাকে মানসিক অত্যাচার। অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন প্রেমিকা। আর তারই ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় ভুয়ো প্রেমিককে। আর তখনই তার আসল পরিচয় জানা যায়।
নিজেকে গাইনোকলজিস্ট পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে অন্য নাম দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল এক প্রতারক যুবক। ফেসবুকে নিজেকে সে ডাক্তার সন্দীপ রায় হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। সেখানে নিজেকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে কর্মরত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল।
আর এমন একজন 'গুণী' ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগর শিমুলপুর এলাকার বছর ২২ বয়সের এক যুবতীর। শুরু হয় মেসেজ আদানপ্রদান। ফোন নম্বরও আদানপ্রদান হয়। আর তারপর ফোনে বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে। এভাবেই যুবতী ওই যুবকের প্রতি দূর্বল হয়ে পরতে থাকেন। সেই সুযোগ নিয়ে প্রথমে একদিন যুবতীর সাধারণ ছবি চেয়ে নেয়। তারপর একদিন যুবতীর নগ্ন ছবি চেয়ে বসে।
প্রথমে সেই ধরনের ছবি দিতে আপত্তি করলেও প্রেমিকের জোরাজুরিতে সেই ছবিও একদিন পাঠিয়ে দেন ওই যুবতী। আর তাতেই নিজের অজান্তে প্রথম বিপদে পরেন তিনি। এরপর প্রেমিকরূপী ওই যুবক নিজের আসল চেহারা প্রকাশ করতে থাকে। ওই ছবিকে ভিত্তি করে এরপর যুবতীকে ব্ল্যাকমেইলিং করতে শুরু করে ওই যুবক। এইভাবে ধাপে ধাপে প্রচুর টাকা যুবতীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় সে। পরিবারের উপর আঘাত হানার ভয় দেখিয়ে যুবতীকে এরপর নগ্ন ভিডিও ছবি পাঠাতে বাধ্য করে ওই যুবক। এইভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকে মানসিক অত্যাচার।
অবশেষে এই অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে একদিন গাইঘাটা থানার দ্বারস্থ হন ওই যুবতী। সেখান থেকে বিষয়টি যায় সাইবার ক্রাইম থানায়। সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিক সুদীপ্ত দে যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেন। আর তখনই জানা যায়, অভিযুক্ত যুবক কোনও গাইনোকোলজিস্ট নয়। সে যে নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল, সেটিও ভুয়ো। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত যুবকের আসল নাম অলোক রায়। বাড়ি নদীয়ার রানাঘাটের মাঠকুমড়া এলাকায়। সে একটি হোটেলে রান্নার কাজ করে। বুধবার অভিযুক্তকে রানাঘাটের মাঠকুমড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন