সমকালীন প্রতিবেদন : বাড়ির ভেতরেই মৃত বধূর দেহ তিন দিন ধরে আগলে রাখল স্বামী। বাড়ির ভেতরে থেকেও মায়ের মৃত্যু সংবাদ জানতে পারে নি ছেলে। বাড়ির ভেতর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্গন্ধ পাওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘরের ভেতর থেকে গৃহবধূর পচা–গলা মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানার সুভাষপল্লী এলাকার এই ঘটনায় ফের একবার কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনা মনে করিয়ে দিল।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত ছিলেন অশোকনগরের সুভাষপল্লী এলাকার বাসিন্দা কল্যাণ দত্তের স্ত্রী মালা দত্ত (৩৬)। বাপের বাড়ির লোকদের অভিযোগ, অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর স্বামী তাঁর চিকিৎসা করাতো না। ফলে একটু একটু করে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। বুধবার বিকেলে প্রতিবেশীরা ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পান। আর তাতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। এরপর অশোকনগর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ সেই বাড়িতে গিয়ে দেখে, স্ত্রী মালা দত্তর পচা–গলা মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছে স্বামী কল্যাণ দত্ত। সেই মৃতদেহ থেকেই দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল।
এরপর পুলিশ ঘর থেকে ওই মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাবড়া হাসপাতালে পাঠায়। যে ঘরে মৃতদেহ পরে ছিল, সেই ঘরের ভেতরে রক্তের দাগও দেখতে পায় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অন্তত ৩ দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন মালা দত্ত। কিন্তু সেকথা কাউকে না জানিয়ে মৃতদেহ আগলে রেখেছিল স্বামী কল্যাণ দত্ত। এমনকি পাশের ঘরে থাকা ছেলে অর্ঘ্যপ্রতিম দত্তও কিছু টের পায় নি। এমনই দাবি অর্ঘ্যপ্রতিমের। সে জানায়, শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই অন্য ঘরে নিজের মতো করে গত কয়েকদিন ছিল সে। মাঝেমধ্যে বাবার কাছে মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে বাবা বলতো, মা আগের থেকে ভালো আছে।
বুধবার বিকেলে বাবাকে উদভ্রান্তের মতো ঘরের ভেতরে বসে থাকতে দেখে বাবার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সে প্রথম জানতে পারে যে, তার মা মারা গেছে। মায়ের থাকার ঘর থেকে দুর্গন্ধ পায় সে। এরপরই সে এই ঘটনার কথা আত্মীয়দের জানায়। এমনই দাবি করেছে অর্ঘ্যপ্রতিম। মৃত মালা দত্তর বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, স্বামী কল্যাণ দত্তর অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে মালা দত্তর। এই অভিযোগ তুলে এদিন তাকে মারধোরও করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অশোকনগর থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয় নি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন