সমকালীন প্রতিবেদন : গ্রীষ্ম ও বর্ষার খণ্ডচিত্রে এখন যেন দ্বিধাবিভক্ত ভারত। দেশের একদিকে সূর্যের তেজে পুড়ছে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে বৃষ্টির দাপটে নাজেহাল জনজীবন। এরই মাঝে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ১১ থেকে ১৪ জুনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়ায় বড়সড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের উপ-হিমালয়ান অঞ্চল যেমন দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে শনিবার ও রবিবার (১৪-১৫ জুন)।সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ওড়িশা ও ছত্তিশগড়ে ৯ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার-ঝাড়খণ্ডে ১১ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে গঠিত জোড়া ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বুধবার (১১ জুন) থেকে শুক্রবার (১৩ জুন) পর্যন্ত ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও কলকাতা।
এই সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ, দমকা হাওয়া (৩০–৪০ কিমি/ঘণ্টা) এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে, আবহাওয়াবিদদের মতে, ‘মনসুন ব্রেক’ চলার কারণে এখনো দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার প্রবেশের পরিবেশ তৈরি হয়নি। বর্ষা ঢুকতে পারে জুনের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ।
রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ সহ পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে তাপপ্রবাহ অব্যাহত। রাজস্থানে তাপমাত্রা পৌঁছেছে ভয়াবহ পর্যায়ে—শ্রীগঙ্গানগরে ৪৭.৪ ডিগ্রি, বিকানের, চুরু, বারমেড়, ফালোদি, কোটা প্রভৃতি জেলাতেও ৪৫ ডিগ্রি পার করেছে পারদ।
দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে ৯-১২ জুন পর্যন্ত তীব্র গরম, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে। গরম হাওয়া বইবে ঘণ্টায় ২০-৩০ কিমি বেগে। তবে, ১৩ জুনের পর দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা, যা কিছুটা স্বস্তি আনতে পারে।
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও বিদর্ভ অঞ্চলে ১১-১২ জুন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎ। উত্তর মধ্যপ্রদেশে তাপপ্রবাহ চলবে ১০-১১ জুন পর্যন্ত। মধ্য ভারতের কিছু অংশে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়বে বলে পূর্বাভাস।
যদিও দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে কোথাও কোথাও বৃষ্টির দেখা মিলছে, তবুও পূর্ণমাত্রার বর্ষা এখনও ঢোকেনি মূল ভূখণ্ডে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলেও, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হতে সময় লাগবে আরও কিছুদিন। ততদিন গরম ও বৃষ্টির এই টানাপোড়েন চলবেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন