Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫

বিজেপির শীর্ষে কে? জল্পনা তুঙ্গে সর্বভারতীয় সভাপতির পদে নতুন মুখ নিয়ে

 

All-India-President-of-BJP

সমকালীন প্রতিবেদন : একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ও সামনের লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে, বিজেপি এখন দলের কাঠামো গুছিয়ে নেওয়ার কাজে ব্যস্ত। কেন্দ্র থেকে রাজ্য, জেলা থেকে বুথ— সর্বত্র সংগঠন মজবুত করতে চলছে নির্বাচন ও নতুন নেতৃত্বের খোঁজ। এরই মাঝে রাজনৈতিক মহলে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে এবার কে বসছেন?

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সর্বভারতীয় সভাপতির দায়িত্ব পান জগৎ প্রকাশ (জেপি) নাড্ডা। তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি ২০২৪-এর লোকসভা ভোটেও জয়ী হয়েছে এবং টানা তৃতীয়বার কেন্দ্রে সরকার গঠন করেছে। এবার কি তবে নাড্ডার মেয়াদ বাড়ানো হবে? নাকি আসছে নতুন মুখ?

জানা গেছে, বিজেপি ইতিমধ্যেই অধিকাংশ রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন শেষ করেছে। তবে এখনও পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে রাজ্য সভাপতির নির্বাচন হয়নি। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের ৭০টি জেলায় জেলা সভাপতি নির্বাচন ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলের অনুমান— দল চাইছে একে একে তৃণমূল স্তরের নির্বাচন শেষ করে সর্বভারতীয় সভাপতির নির্বাচন করতে।

তবে সাম্প্রতিক পহেলগামের জঙ্গি হামলা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে এই প্রক্রিয়া সামান্য পিছিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। সংবাদমাধ্যম ও দলীয় সূত্র অনুযায়ী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে তিনটি নাম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে। প্রত্যেকেই অভিজ্ঞ, প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক দক্ষতায় উজ্জ্বল এবং আঞ্চলিক প্রভাবও যথেষ্ট।

১. ধর্মেন্দ্র প্রধান‌ : তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পাশাপাশি, ওডিশার প্রথমসারির নেতা এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তৃণমূল স্তরে সাংগঠনিক দক্ষতা, জাতীয় নেতাদের ঘনিষ্ঠ তিনি। ২০২৪-এ বিজেপির ওডিশা সাফল্যে অবদান রয়েছে তাঁর।

২. শিবরাজ সিং চৌহান : মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চৌহান। তবে বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দলীয় ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ তিনি। বিজেপির ভাঁজে ভাঁজে সম্পর্ক, বিশেষত গ্রামের স্তরে গ্রহণযোগ্যতা তাঁর। 

৩. মনোহর লাল খট্টর : তিনি হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সুশৃঙ্খল প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা, ‘সাংঘিক’ শৃঙ্খলায় পারদর্শী তিনি। নাগপুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।

দলের একাংশ মনে করে, যেহেতু লোকসভা ভোটে জেপি নাড্ডার নেতৃত্বে বিজেপি ফের ক্ষমতায় ফিরেছে, তাই তাঁর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আবার অনেকে মনে করছেন, দল নতুন মুখ এনে ভবিষ্যতের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করতে চাইছে— বিশেষ করে ২০২৯-এর দিক তাকিয়ে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন— দল চাইছে এমন একজন নেতা, যিনি প্রচারে আগ্রাসী, আবার সংগঠনের গভীরতাও বোঝেন।

সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত প্রায়শই নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ পরামর্শে নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নয়, দলের ভবিষ্যৎ রণকৌশলের অংশ হিসেবেই বেছে নেওয়া হবে উপযুক্ত মুখ। ২০২০ সালে নাড্ডার নিয়োগেও ঠিক এমনটাই ঘটেছিল। এবারও হয়তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ‘টপ ব্রাস’-এর হাতে এবং তা ঘোষণার আগ পর্যন্ত অনুমান চলতেই থাকবে।

কে হবেন বিজেপির আগামী সভাপতি— সেটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। এটা শুধু দলের সংগঠনের প্রশ্ন নয়, বরং আগামী লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কতটা দৃঢ় পদক্ষেপে এগোতে পারবে, তা-ও অনেকাংশে নির্ভর করছে এই সিদ্ধান্তের উপর। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদে যিনি বসবেন, তিনিই হবেন বিজেপির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি, অন্তত আগামী চার-পাঁচ বছরের জন্য।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন