সমকালীন প্রতিবেদন : ব্রিটিশদের দৌলতে ভারত এবং চিনে আনুষ্ঠানিকভাবে চায়ের প্রচলন শুরু হয়েছিল বহু বছর আগে। আর এখন তো সবার ঘরে ঘরে চা অপরিহার্য। সাধারণভাবে আমরা জানি, চা বেশ এনার্জি নিয়ে আসে। কিন্তু চায়ের প্রধান গুন সম্প্রতি একটি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের গবেষকদের একটি সমীক্ষা তথা গবেষণা জানাচ্ছে, রোজ এক কাপ চা খাওয়ার অভ্যাসই ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আপনার মস্তিষ্ককে অনেকখানি সবল করে তুলবে। বয়স হলে স্মৃতিশক্তির দুর্বলতায় ভোগেন অনেকেই।
অনেক সময় ভুলে যাওয়ার সমস্যার সঙ্গেই যুক্ত হয় দৈনন্দিন কাজকর্ম করার উপযোগী মানসিক দক্ষতার অভাবও। ডাক্তারি পরিভাষায় এই রোগকে বলা হয় ডিমেনশিয়া। আর এই রোগ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এর নানা কারণ আছে। অতিরিক্ত স্ট্রেস, ভয় বা দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে এই রোগ বৃদ্ধি পায়।
সিঙ্গাপুরের ওই গবেষক সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৯৫৭ জন চীনা নাগরিককে নিয়ে এই সমীক্ষা চালান, যাদের প্রত্যেকেরই বয়স ছিল ৫৫-এর বেশি। সেই সমীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে, নিয়মিত চা খাওয়ার অভ্যাস বয়স্কদের মধ্যে জ্ঞানমূলক কাজকর্ম করার মস্তিষ্কজনিত অক্ষমতার সম্ভাবনাকে ৫০ শতাংশ হ্রাস করে।
এমনকি পুরুষানুক্রমিকভাবে অ্যালজাইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি, নিয়মিত চা-পানের অভ্যাস তাদের মধ্যেও এই রোগের সম্ভাবনাকে ৮৬ শতাংশ কমিয়ে দেয়। ফলে এতে মানুষের উল্লোসিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
কিন্তু গবেষকেরা বলছেন এর যথার্থ এফেক্ট পেতে গেলে, পাতা চা খেতে হবে। গবেষকেরা বলছেন, বেশিরভাগ ভারতীয় বা চিনারা যে চা পান করেন, তার অধিকাংশই পাতা চা নয়। চা-এর গুঁড়ো থেকে চা তৈরি করলে চা-এর এই উপকারিতা পাওয়া যাবে না।
কেবলমাত্র পাতা চা-ই স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ফেং লেই তাদের গবেষণা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিমেনশিয়াকে রোধ করার এক প্রাকৃতিক উপায় হলো চা-পান।’ বেশি নয়, দিনে মাত্র এক কাপ চা পান করলেই ডিমেনশিয়ার কবল থেকে নিজেকে অনেকটা মুক্ত রাখা যাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন