সমকালীন প্রতিবেদন : অনিয়ম করে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেই তালিকায় উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের ৪ জন রয়েছেন। এছাড়াও, দুজন শিক্ষক–শিক্ষিকাও রয়েছেন। এই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা বাগদার চন্দন মন্ডলের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ বাগদার প্রাক্তন বিধায়কের।
রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ঘটনায় মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই। আর সেই তদন্তেই উঠে এসেছে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ। দিন যতো এগোচ্ছে, অনিয়মের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
স্কুলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছেন বাগদার এক ব্যক্তি। বাগদার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের কথায় যিনি 'রঞ্জন'।
পরবর্তীতে জানা যায়, এই রঞ্জনের আসল নাম চন্দন মন্ডল। আর তার হাত ধরে শুধু বাগদা নয়, বনগাঁ মহকুমা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের চাকরিপ্রার্থীরা আজ বিভিন্ন স্কুলে চাকরি করছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধীদের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হচ্ছিল।
বাগদা এলাকায় যে অনিয়মের মাধ্যমে একাধিকজন চাকরি পেয়েছেন, অবশেষে তার প্রমান মিললো। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে যে ভুয়ো নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে আপাতত ৪ জন শিক্ষাকর্মী এবং দুজন শিক্ষকের নাম প্রকাশ্যে এসেছে।
এই অনিয়মের তালিকায় শিক্ষাকর্মী হিসেবে যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন– কাশিপুর গ্রামসভা হাইস্কুলের অসীম বিশ্বাস, চরমন্ডল সিএমপিপিবিকে ফুলমোহন হাইস্কুলের বিপ্লব বিশ্বাস, কুড়ুলিয়া হাইস্কুলের হরিমোহন ঘোষ এবং আষাড়ু জুনিয়র হাইস্কুলের সুপর্ণা ভদ্র রায়।
বাগদার রনঘাট অঞ্চল হাইস্কুলে জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি পাওয়া রমা মন্ডলের নামও এই তালিকায় রয়েছে। তিনি বাগদা এলাকার এক তৃণমূল নেতার আত্মীয়া বলে বিরোধীদের দাবি। গত শনিবারও তিনি স্কুলে গিয়েছিলেন। তালিকা প্রকাশের পর থেকে আর স্কুলে যাচ্ছেন না। অনিয়মের তালিকায় শান্তনু বিশ্বাস নামে বাগদার আরও এক শিক্ষকের নামও উঠে এসেছে।
এব্যাপারে তার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শান্তনু দে জানালেন, রমা মন্ডলের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছ থেকে তারা কোনও কাগজপত্র পান নি। ফলে তিনি অবৈধ উপায়ে চাকরি পেয়েছেন কি না, সে বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। এদিন রমা দেবির বাড়িতে এবং স্কুলে গিয়ে তার দেখা মেলেনি।
শুধু বাগদা নয়, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের প্রকাশ করা অনিয়মের তালিকায় বনগাঁ মহকুমার একাধিক শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর নামও প্রকাশ্যে চলে আসায় সোরগোল পরে গেছে। তাদের চাকরির ভবিষ্যৎ কি দাঁড়ায়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সব পক্ষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন